অনুকাব্য – আমার আমিত্বের কারাগার

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

1.
আমি আমাতে আঁকিবো তোরে
আমার মাঝে, ফুটায়ে তুলিবো
সুবাস টুকু তোর, রূপে রসে ভরে!
আমার কনকদেউলে আমি
জ্বালাইবো তোর দীপ শিখারে!
আমাতে রাখিবো তোরে!

2.
ভুলিয়াছি পথ, আমার পূর্বরথ
ফিরিবো কি ফের, আমি’র দ্বারে?
এযে ভগ্নদশা, শুধু যাওয়া আসা
জিবনে মরণে, বাধিতেছে মোরে!

3.
স্বরণ বৈঠা হাতে তুলে মন, রূপের দরিয়ায়
উজান গাঙের পথে পথে যেনো, এ তরী বয়ে যায়।
নয়নে নয়ন তারার, জ্বালায়ে দিশা
তব চরণে এ প্রাণ যেনো, নিয়ত রয়ে যায়।

4.
যে অনন্তে অনন্তময়,
বাহিরও তারে পাইতে চাহে আমার বিশ্বময়।
হৃদয়ে যেজন হৃদয়নিধি জাগ্রত অনিবার
বাহিরেও তাহার পরশ চাহে আমার আঁখিধার।
হে পরমতমস্ত, প্রেমোময়-
হৃদয় সম বাহিরও আমার, ঘিরে রেখো করুণায়।

5.
বাহিরে যারে খুজে ফিরি
সেতো হৃদয়ের ধন, রহে নিরবধি
হৃদয়ে আমারি!
হৃদয়ে যে রয়,
ভিতর বাহির ছাপাইয়া সে উঠে
আমার বিশ্বময়!
বৃথা খুজি তারে!
সে তো অন্তরময়, মোর সর্বব্যাপী
দিবানিশি বাস করে!

6.
আমার অস্তিত্বে আজ মৃত্যুর পিপাসা!
দন্ডদাতা! কেনো তুমি দূরে –
হৃদয় রুধিরাক্ত! চাই নির্মম মৃত্যু
জল্লাদ! তব তলোয়ারে –
দেখি কতো জোর!! পোক্ত বাজু দুটি
কর উত্তোলন! হানো মরণ দংশন শিরে!
সমর্পণের আকুলতা! তৃপ্ত হউক প্রাণ
শাশ্বত গন্তব্যে! মরণ অভিসারে!!

7.
হারানো হিয়া’টি জানে –
আমার সকল নিবেদন প্রভু – তোমার শ্রীচরণে!

8.
কত রূপে কত রঙে, ধরার সকল খানে
তোমারে রাখিয়াছো বিলীন করে,
আমি তো অবলা অতি, জ্ঞানহীন মূঢ়মতি
মোর অন্ধ নয়ন কি ও রূপ দেখিতে পারে?

9.
আমি তোমারে রাখিবো হৃদয়ে যতনে
আমারে বিলীন করে,
তব সুখে দুঃখে হ’বো সুখী দুঃখী
নিজেরে হারাবো, পাইতে তোমারে।

10.
আমি আমার আমিত্বের কারাগার ভেঙ্গে প্রভু
তোমার মহৎ আমিত্বরে করি আহ্বান…
যেন হই তোমাময়, তব গুণে গুণী
তব শক্তিতে বলীয়ান।
তোমার অনন্ত আমিত্বরে, করি আহ্বান!

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

আপন খবর