কাজী বেনজীর হক চিশতী নিজামী
নবী করিম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম বললেন, আমার এ তাওহিদ ঘোষণার সাক্ষী বা সাহায্যকারী কি আপনাদের মধ্যে কেউ হবেন ? তখনো কেউ সাড়া দিলো না। তখন মাওলা আলী আলাইহিস্ সালাম দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আমি আপনার নবুয়তের সাক্ষী এবং সাহায্যকারী হবো। এভাবে তিনি ৩ বার বললেন, এবং ৩ বারই কেউ সাড়া দিলো না, আর তিনবারই মাওলা আলী আলাইহিস সালাম বললেন, ‘আমি আপনার নবুয়তের সাক্ষী এবং সাহায্যকারী হবো। এরপর রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম বললেন – হে আলী, তুমি হলে আমার নবুয়তের স্বীকৃতিদানকারী, সাহায্যকারী এবং আমার ভাবি ওয়াছি। তখন সবাই হাস্য- রসিকতা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে বললো, হে আবু তালিব ! তোমার ভাতিজা চাইছে আমরা সবাই বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগ করে তার হুকুম-নির্দেশ মেনে চলি। এখন থেকে তোমাকেও তোমার পুত্র ও ভাতিজার নির্দেশ মেনে চলতে হবে ! এ কথা বলে সবাই চলে গেলো। পিতৃধর্মের দেয়াল ভেঙ্গে শাশ্বতকালের ইসলামকে (মৃত্যুঞ্জয়ী হওয়ার ধর্ম) ওরা স্বীকার করে নিতে পারেনি, এ এক কঠিন দেয়াল। এখনো ৭২ ফেরকার লোকেরা পিতৃধর্মের দোহাই দিয়ে অলিয়ম মুর্শিদের (নবুয়তে নবী-রাছুল আর বেলায়েতে অলি-আল্লাহ সবাই মুর্শিদ/গুরু) নিকট বায়াত (আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে ঈমান গ্রহণ করা) হতে পারেনি/পারছে না। তখনো কাফের-মুশরিকগণ পিতৃ ধর্মের দোহাই দিয়ে তাদের ধর্মই সত্য, তারা খোদার ধর্মে আছে এ যুক্তি উপস্থাপন করে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালামকে এবং দ্বীনে মুহাম্মদী বা ইসলামকে কবুল করে নিতে পারেনি, এখনো পারছে না। কতোগুলো লেংড়া-লুলা খোড়া যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করছে আর নানা ফেরকা প্রসব করে চলছে। তাদের এ ধরনের ফেরকাবাজির আতুর ঘরের দুর্গন্ধে মানব জাতি দিশেহারা। যাক, মাওলা আলী আলাইহিস্ সালামই হলেন কালেমা শাহাদাতের ভিত্তি। মোহরে নবুয়তে উপরে মাওলা আলী আলাইহিস সালামের বেলায়েত চির প্রবাহিত। উম্মতে মুহাম্মদীগণ আল্লাহ ও তাঁর হাবিব মুহাম্মদ রাছুলকে চিনে-দেখেই কালেমা শাহাদাত পাঠ করছে মানে সাক্ষী দিচ্ছে। কিভাবে সেই ভেদ-রমুজাত জানা/বুঝা যাবে তা মাওলা আলী আলাইহিস সালামের ইলমে বেলায়েতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয় সমস্ত পবিত্র মঞ্চগুলো বেয়ে হাবিবে খোদা মুহাম্মদ রাছুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম আগমন করছেন-সমস্ত আম্বিয়াগণই জেনে-চিনে এ বিষয়ে সাক্ষী দিয়েছেন। সে পবিত্র মঞ্চগুলোর মধ্যে হাবিবে খোদা এক মুহাম্মদ ব্যতিত আর কেউ নেই-ইহা শাশ্বতকালের কথা। সর্ব ধর্মের সর্ব মহাপুরুষের অস্তিত্বে এক মুহাম্মদ বিরাজমান। যাক, রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম নিজেই বলছেন, “আমি ইলেমের শহর আলী হলো সেই শহরের দরজা, যে আমার ইলেম লাভ করতে চায় সে যেন আলীর দরজা দিয়ে আসে (আল বিদায়া ওয়ান্ নিহায়া, ৮ম খন্ড, ৩৬০পৃষ্ঠা, আল মুজামুল কবীর, হাদিস নং-১১০৬২)।”
আরো বলছেন, “আনা দারুল হিকমাহ্ ওয়া আলীউ বাবুহা (তিরমিযি, মানাকিব অধ্যায়, মেশকাত, বাবে আহলে বাইয়্যেত)।” অর্থাৎ আমি হলেম প্রজ্ঞার নগরী এবং আলী হলো তার দরজা। এ ‘প্রজ্ঞা’ কথাটির মধ্যে জাহির-বাতিন সৃষ্টির সর্ব রকম জ্ঞানেরই সমাহার ঘটেছে। ওহী কালামের মধ্যে ‘জ্ঞান’ ও ‘প্রজ্ঞা’ দুটিই রয়েছে-যা রাছুলপাক সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালামের উপর নাযিল হচ্ছে। তিনি তা নিজের ভাষায় (সৌদি আরবের ভাষায়) সাহাবীদেরকে শিক্ষা দিতেন। ইহাই হলো ইলমে মারেফাত। যেমন, সুরা বাকারার ১২৯ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, “রাব্বানা ওয়াব্আস ফীহিম রাছুলান মিন হুম।” অর্থাৎ (ইবরাহীম ও ইসমাঈল বললেন) হে আমাদের রব ! তাদের মধ্য হতে তাদের জন্য একজন রাছুল পাঠাও। “ইয়াত্লু আলাইহিম আইয়াতিকা ওয়া ইউআল্লেমুহুমূল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা ওয়া ইউজাক্কিহিম।” অর্থাৎ তিনি তাদের উপর তেলওয়াত করবেন তোমার আয়াত এবং তাদেরকে হিকমত ও কিতাবের জ্ঞান শিক্ষা দিবেন এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন। “ইন্নাকা আনতাল আজিজুল হাকিম।” নিশ্চয়ই তুমি সর্বোচ্চ হিকমতের অধিকারী। সুরা বাকারার ১৫১ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, “কামা আরসাল্না ফীকুম রাছুলান্ মিনকুম।” অর্থাৎ যেমন আমরা তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের নিকট রাছুল প্রেরণ করেছি। ইয়াত্লু আলাইকুম আইয়াতিন।” অর্থাৎ তিনি তোমাদের উপর আমাদের আয়াত (নির্দশন) তেলওয়াত (দেখান) করেন। “ওয়া ইউজাক্কিকুম ওয়া ইউআল লেমুকুমুল কিতাবা ওয়াল হিকমাত।” অর্থাৎ এবং তোমাদেরকে পবিত্র করেন এবং তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত (বিজ্ঞান) শিক্ষা দেন। “ওয়া ইউ আল্লেমুকুম মা লাম তাকূনু তায়ালামুন।” অর্থাৎ এবং তোমরা যা জানতে না তা তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। সুরা বাকারার ২৩১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “ওয়ামা আন্জালা আলাইকুম মিনাল কিতাবি ওয়াল হিকমাতি ইয়াএজুকুম বিহি।” অর্থাৎ এবং তোমাদের উপর কিতাব ও হিকমাত নাযিল করা হয়েছে তার সাহায্যে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। পতিত মানুষ সুরা নিসার ১৬৪ নম্বর আয়াতে এ কথা বলা হয়েছে। এ ইলেমের দরজাটি হলেন একমাত্র মাওলা আলী আলাইহিস সালাম। সুতরাং যার শাজরা নামা মাওলা আলী আলাইহিস্ সালামের সাথে যুক্ত নেই, ইলমে এলাহী বা ইলমে বেলায়েত/গুপ্ত রহস্যের জ্ঞান তার পাবার কোনো সিষ্টেমই নেই। এ হাদিসটি নিয়ে ৭২ ফেরকার গোমরাহদের মন্তব্য হলো শুধু আলীই নয়, সব সাহাবাগণই ইলমে নব্বীর অধিকারী ছিল। হ্যা, সব সাহাবীগণ যা জানতেন তা হলো ইলমুল লেসানী/জাহেরী, ইলমুল ক্বালবী/ইলমে এলাহী/ইলমে নব্বী নয়। বাতিনী ইলেম/ইলমে এলাহী জাহিরী ইলেমের সম্পূর্ন বিপরীত। “আমি মুহাম্মদ হলেম ইলেম ও হিকমাতের (জ্ঞান ও প্রজ্ঞার) নগরী আর তার একমাত্র দরজাটি হলো আলী আলাইহিস সালাম।” (হাদিস)।
সৃষ্টির মধ্যে এ একক গুণ বা মর্যাদাটি অধিকারী একমাত্র মাওলা আলী আলাইহিস সালামই। ‘ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাতা’ কিতাবের ৭০ পৃষ্ঠায় ইবনে মাসুদ রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাছুলপাক সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালামের সন্মুখে ছিলাম। হঠাৎ হযরত মাওলা আলী আলইসি সালামের জ্ঞান-গরিমা সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বললেন, “জ্ঞানকে ১০ ভাগ করে ৯ ভাগ মাওলা আলীকে এবং অবশিষ্ট এক ভাগ সমস্ত পৃথিবীর লোককে দেয়া হয়েছে। এ ১০ ভাগের অধিকাংশ মাওলা আলী আলাইহিস সালাম পেয়েছেন।” জ্ঞানের দু’টি ভাগÑএকটি ‘মুতাশাবেহাত বা তাশাবাহা অপরটি মুহকামাত। একটি রূপক অপরটি সমুজ্জ্বল অর্থ। কোরানের সমুজ্জ্বল অর্থটি জানলে নিজকে চেনা যায় তথা খোদাকে চেনা যায়। সেই ইলমে বাতিন সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বানীটি হলো, তিনি বলেন, “আন আবি হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু কালা হাফিসতু মিন রাছুলিল্লাহি ইওয়াইনে ফাআম্মা আহাদুহুমা ফাবাস্তুহু ওয়া আম্মাল আখারু ফালাও বাস্তুহু কুতিয়া হাজাল মাল্উম্।” অর্থাৎ হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু বলছেন, আমি রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম হতে ইলেমের দু’টি পাত্র (জাহের এবং বাতেন) মুখস্ত করে রেখেছিলাম, তারই একটি পাত্র আমি বিতরণ করে দিয়েছি এবং অপর পাত্রটি প্রকাশ করলে আমার গলা কাটা যাবে। (বোখারী-১২২ নম্বর হাদিস, আত্-তারগীব ওয়াত তারহীব)।” ‘আত্-তারগীব ওয়াত্ তারহীব” কিতাবের ১ম খন্ডের ১২৩ পৃষ্ঠার ৪০ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, “আন জাবিরীন কালা-কালা রাছুলুল্লাহ সা. আল ইলমু এলমানে, ইলমু ফিল ক্বালবী, ফাজাকাল ইলমু নাফে ওয়া ইলমু আলাল নিসানে ফাজাকা হুজ্জাতুল্লাহি আলা ইবনে আদম।” অর্থাৎ হযরত জাবির থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াচ্ছাল্লাম বলছেন, ইলেম দুই প্রকার ঃ এক ক্বালবী ইলেম-ইহাই উপকারী/ মানবের কার্যকরী ইলেম। দ্বিতীয় হলো ইলমুল লেসানী-ইহা আদম সন্তানের জন্য দলিলস্বরূপ। এ হাদিসটি হযরত আনাস থেকেও বর্র্ণিত আছে (আত্-তারগীব ওয়াত্ তারহীব- ১ম খন্ড, ১২৩ পৃষ্ঠা)। যা দলিলস্বরূপ তার হাকিকত না জানলে/না জেনে শুধু জাহিরী বিদ্যা দ্বারা কথা বললেন, দ্বন্দ্ব-বিভেদ হবেই এবং তাতে মানুষ পথভ্রষ্ট হবে।
আত-্তারগীব ওয়াত্-তারহীব কিতাবের ১২৪ পৃষ্ঠায় হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম বলেন, “এক ধরনের ইলেম গুপ্ত মুক্তাসদৃশ্য (ইলমে মারেফাত/ ইলমে এলাহী/ইলেম বাতেন)। আরিফবিল্লাহগণ/আধ্যাত্মিক জ্ঞানীগণ ছাড়া আর কেউ তা অবগত নয়। অচেতন (গাফিল)/অজ্ঞ-মূর্খ ছাড়া কেউ তা অস্বীকার করে না।” রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম. বলেন, আল্লাহপাক যার মঙ্গল/কল্যাণ চান তাকে ইলেম দান করেন (মুসলিম, বোখারী ও ইবনে মাজাহ), যাকে দ্বীনের ইলেম (আত্মার জ্ঞান/ইলমে এলাহী) দান করা হয়নি তার ইবাদতের কোনো দাম/গুরুত্ব নেই।” কোরানের ঘোষণা হলো, “ওয়া আসবাগা আলাইকুম নিয়ামাহু জাহিরাতাও ওয়া বাতিনাতান ; ওয়া মিনান্ নাসি মাই ইউজ্বাদিলু ফিল্লাহি বিগাইরি ইলমিও ওয়ালা হুদাও ওয়ালা কিতাবিম মুনীর।” (সুরা লোকমান-২০)।” অর্থাৎ এবং তোমাদের জন্য (আল্লাহপাক) একটি জাহেরী (প্রকাশ্য) ও একটি বাতেনী (অপ্রকাশ্য) নেয়ামতের সাব্গা (প্রাচুর্য) দান করেছেন। কিন্তু মানুষদের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতার সহিত বিতর্ক (জিদাল) করে ; অথচ তার নাই কোনো হুদা (পথ প্রদর্শক) ; অধিকন্তু তার নাই কোনো মুনীর তথা নূরময়, দীপ্তিমান) কিতাব। এ আয়াতের মুহকামাত হলো সেই গুপ্ত ইলেম/নূর যার দ্বারা আলোকিত হয়ে মানুষ ওলীআল্লাহ হয়ে যায়, তার তাশাবাহা/রূপকটি হলো জাহেরী ইলেম। নূরময় তথা আলোকিত মানুষ তথা আল্লাহর নূর যে মানুষের মধ্যে উদয় হয়েছে বা জাগরণ ঘটেছে সে মানুষটি নিজেই মুনীর/নূরময় কিতাব। এ নূর/ইলেম আসমানী, জমিনের নয় তথা জাগতিক জগতের নয়, মাদ্রাসার নয়। মানবীয় জ্ঞান যেখানে শেষ আল্লাহর ইলেম সেখান থেকে শুরু। জাহেরী ইলেম সবাই জানে কিন্তু বাতেনী ইলেম সবাই জানে না, জানে একমাত্র আরেফেবিল্লাহগণ/প্রেরিত পুরুষগণ/পরকাল প্রাপ্ত/ আলোকিত মানুষগণ এবং ইহাই মানবের একমাত্র উপকারী ইলেম-যা মানুষকে মহাপুুরুষে অধিষ্ঠিত করে, মৃত্যুঞ্জয়ী করে। ঈমানদারগণ/উম্মতে মুহাম্মদীগণ সে ইলেম অর্জন করে বাস্তবে মুক্তি লাভ করছে। রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম বলেন, “যে কেউ ইলেম অর্জন করে তার পূর্ববর্তী যাবতীয় পাপরাশি ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” এ ইলেম মাদ্রাসার নয়, যারা মাদ্রাসার বিদ্যাকে বুঝে-বুঝায় তারা অন্ধ-জাহেল-দজ্জাল। এ ইলেম আল্লাহ প্রদত্ত, বাতেনী ইলেম, আসমানী ইলেম/ইলমে এলাহী। আল্লাহু আলিমুন-মানে আল্লাহপাক নিজেই ‘ইলেম’-সর্বজ্ঞাত, ইহা তাঁর সেফাতি নাম। ‘আজ্জাতু কুল্লুহু আলিমুন’-এ নামের সাথে যার যোগসূত্র তথা আল্লাহপাকের ইলেম যে পরিশুদ্ধ মানুষের মধ্যে নাযিল হয়/উদয় হয় তিনিই হলেন আলেম-জিন্দা নূরময় কিতাব, বেলায়েতে ওরাই হলো ওয়ারেছাতুল আম্বিয়া (আল্ উলামাউ ওয়ারাসাতুল আম্বিয়ি ইউহিব্বুহুম আহলিস্ সামায়ি ওয়া ইয়াস তাগফিরু লাহুমুল হিতানু ফিল বাহরি ইলা ইয়াওমাল কিয়ামাত। অর্থাৎ আলেম সম্প্রদায় (ওলীগণ) নবীদের ওয়ারিশ। আকাশবাসী ফেরেশতাকুল তাদেরকে মহব্বত করেন। নদীর মাছ তাদের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে (তিরমিযী, ইবনে মাজা, আবুদাউদ)।
আসমানী কিতাব পাঠ করছে ; যা অপবিত্রাবস্থায় কোনো দিনই স্পর্শ করা যাবে না। এ ইলেম হলো নূর-এ নূর যার মধ্যে নাযিল/উদয় হয় তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং তিনি হয়ে যান ওলীআল্লাহ। যতো ইবাদতই করা হোক হাশরের দিন তার প্রতিফল পাবে ইলেম অনুযায়ী এবং মানুষের মর্যাদাও হবে ইলেম অনুয়ায়ী। সুরা নেসার ৭০ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, “জালীকাল ফাদ্লু মিনাল্লাহি ওয়া কাফা বিল্লাহি আলীমান্।” অর্থাৎ উহা আল্লাহর পক্ষ হতে (তাদের প্রতি) বিশেষ অনুগ্রহ এবং জ্ঞানী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহপাকের বিশেষ রহস্যময় সাতটি সেফাতি নামের মধ্যে একটি হলো আলিমুন। ঐ সাতটি সেফাতি নাম আল্লাহর সমস্ত সেফাতের মূল এবং স্বয়ং-ই তিনি। ঐ নূরী নামের অধিকারীদের সম্পর্কে বলা হচ্ছে, “আফামান্ শারাহাল্লাহু ছাদ্রাহু লিল্ ইসলামি ফাহুওয়া আলা নূরীম্মির রাব্বিহী (সুরা যুমার-২২)। অর্থাৎ এবং যে ব্যক্তির অন্তর/দীল/মন/সদ্র রব ইসলামের (সম্যক গুরুর নিকট আত্মসমর্পনের) জন্য উন্মুক্ত/খুুলে দিয়েছেন, অতএব তারা তাদের রবের নূরের (আল্লাহু আলিমুনের) উপর আছেন। ইসলামে পরিপূর্ণ দাখেল হতে হলে খান্নাছমুক্ত নফস তৈরী করতে হবে-ইহাই কোরানের নির্দেশ। যারা মুসলমান পিতার ঘরে জন্ম নিয়ে মুসলমান দাবী করছে তা কোরান বিরোধী/ধর্মবিরোধী কথা, ইহা ফেরাউন-নমরুদ, আবু জাহেল, আবু লাহাব এবং মুনাফেক মুয়াবিয়া-ইয়াজিদের মতবাদ। পিতৃধর্মানুসারীদের দাবি কোরানুল করিমে স্বীকৃতি দেয়নি, যুগে যুগে পিতৃধর্মানুসারীগণই নবী-রাছুলদের বিরোধীতা করেছে এখনো ওলীদের/গুরুদের/মুর্শিদের বিরোধীতা করছে। ৭২ ফেরকার লোকদের কথা তথা যারা গুরুবাদী নয় তারা পিতৃধর্মনুসারী তথা স্ব-ঘোষিত ধার্মিক, প্রবৃত্তি পূজারী। তা’হলে নূহ নবীর ছেলে কেনানও মুসলমান দাবী করতে পারতো, কিন্তু সে কাফের। নবীর ছেলে কি করে কাফের হলো তা কি ভাবনার বিষয় নয় ? আল্লাহপাক নূহনবীর ছেলে কেনানকে তাঁর আওলাদই (বংশধর) স্বীকার করলেন না (সুরা হুদ-৪৫)। ইয়াকুব ও ইবরাহীম নবী কেনো তার পুত্রদেরকে বললেন, “ইয়া বানাইয়্যা ইননাললাহাস্তাফা লাকুমুদ্ দ্বীনা ফালা তামূতুন্না ইল্লা ওয়া আন্তুম মুসলিমুন (সুরা বাকারা-১৩২)।” অর্থাৎ হে পুত্রগণ ! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের জন্য দ্বীনকে মনোনীত করেছেন। সুতরাং তোমরা মুসলমান হওয়া ব্যতিত মৃত্যুবরণ করো না। যেহেতু ইবরাহীম এবং ইয়াকুব নবী মুসলমান সেহেতু তাদের পুত্রগণও তো নিজেকে মুসলমান বলে দাবী করতে পারতো ! তবে কেনো “মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না”-এ উপদেশটি দিলেন ?
নবুয়তে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামই হলেন গুরু/মুর্শিদ, বেলায়তে ওলীআল্লাহগণ। তারা বহু হয়েও এক-ঐক্যতায়/তাওহিদে স্থিত। নবী পরিচয়ে কেউ আসবে না, আসবে ওলী পরিচয়ে, কাজ একই শুধু উপাধি ভিন্ন। সুতরাং গুরু/মুর্শিদের নিকট বায়াত/আনুগত্য স্বীকারকারীগণই হলেন ঈমানদার/আমানু। প্রবৃত্তির পূজারী/ অনুসারীগণ ওলিয়ম মুর্শিদ/গুরু পাবে না (সুরা কাহাফÑ১৭)। আমানুদের প্রতিই খোদার নির্দেশ যেন খান্নাছমুক্ত হয়ে পরিপূর্ণ ইসলামে দাখেল হয়ে যায়। উত্তম চলা নবুয়তের চব্বিশ ভাগের এক ভাগ এবং নবীজি রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াচ্ছাল্লামের আগমন হয়েছে, মানুষের উৎকৃষ্ট গুণাবলীগুলো (ইনছানিয়াত) ফুটিয়ে তোলার জন্য (মেশকাত ৯ম খন্ড-৪৮৩৮, ৪৮৭০)। ইনসাফ হতে ইনছান এবং ইনছানের পবিত্র গুণাবলীই হলো ইনছানিয়াত-যা মাওলা আলীর ইলমে বেলায়েতে স্থিত। মাদ্রাসার ইলেম দ্বান্দ্বিক/বহুমুখী অর্থ প্রকাশ করে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, ইহা মানব রচিত ইলেম/ইলমুল কালাম/ কালাম শাস্ত্র। ইহা আসমানী ইলেম/ইলমে এলাহী অবশ্যই নয়। এ ইলেমে মুফতি, মুহাদ্দেস, মুফাচ্ছের ইত্যাদি হওয়া যায় কিন্তু ওলী-আউলিয়া/গুরু, মুর্শিদ, পীর হওয়া যায় না, বরং এ ইলেম ওলীত্বের দরজার দিকে ধাবিত হওয়া জন্য বাধাস্বরূপ (আল ইলমুল হেজাবুল আকবর)। মহানবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম হলেন ইলমে এলাহীর অধিকারী এবং তার দরজাটি হলো একমাত্র মাওলা আলী আলাইহিস্ সালাম-এ কথা নবীজি সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম নিজেই বলেছেন। বলুন, কোন সাহাবাকে নবীজি সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম আসমানী ইলেমের/ইলমে এলাহীর দরজা বলছেন ? একমাত্র মাওলা আলী আলাইহিস্ সালাম ব্যতিত আর কাউকে নবী করিম রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াচ্ছাল্লাম ইলেমের বা প্রজ্ঞার দরজা বলেন নি। মাওলা আলী আলাইহিস্ সালাম ব্যতিত আর কারো নিকট নবীর ইলেম/ইলমে এলাহী পাবে না, তা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াচ্ছাল্লাম নিজেই বলছেন। আসমানী ইলেম বা ইলমে নব্বী/ইলমে এলাহীর শহর নবী আর তার দরজা হলো মাওলা আলী, সে ইলেম পেতে হলে আলী আলাইহিস্ সালামের দরজা দিয়েই আসতে হবে রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম তা নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। জানা দরকার সব সাহাবাগণই মুমিন ছিলেন না। তারাই মুমিন ছিল যারা আল্লাহর হাবিবের দরজা মাওলা আলী আলাইহিস্ সালামকে ভালোবাসতো/ভালোবাসে, ইলমে নব্বীর দরজার সাথে যুক্ত ছিল/আছে। আর তারাই মুনাফেক যারা মাওলা আলীকে ঘৃণা করে, তাঁর উচ্চ মর্যাদা-ফজিলতকে অস্বীকার করে, তাঁর বিরুদ্ধে শত্রুতা করে/করছে, তাঁর মর্যাদা অন্যান্য সাহাবাদের মতো মনে করে বা দুই নম্বর/চার নম্বর ভাবে/মনে করে। নবীজি সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালামকে বিশ্বাস করলে/মুহাম্মদ রাছুল বলে স্বীকার করলে মুসলমান হবে আর মাওলা আলী আলাইহিস্ সালামকে ভালোবাসলে মুমিন হবে।
মুহাম্মদ হতে আলী এবং আলী হতে মুহাম্মদ মানে মুহাম্মদ ও আলী অবিচ্ছিন্ন (সুনানে ইবনে মাজা, ফাজায়েলে আলী)। আল্লাহপাকেরও এক নাম হলো ‘মুমিন’। আল্লাহপাক মুমিন মানে ঈমান দেনেওয়ালা আর বান্দা মুমিন মানে মানবাত্মার চরম শিখরে আরোহনকারী মহাজন, পরকাল প্রাপ্ত মানুষ। মুমিন আর আল্লাহ অবিচ্ছিন্ন। বিধায় মুমিন কাবার চেয়েও শ্রেষ্ঠ (আল মুমিনু আজামু হুরমাতাম মিনাল কাবাÑ ইবনে মাজা শরীফ)। নবীর আহলে বাইয়্যেতকে যারা না চিনে, না বুঝেই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্পে নিক্ষেপ করছে ওরা মুনাফেক। আর ৭২ কাতারের কাফের/মুনাফেকগণ অন্ধ-বধির থেকে জাহান্নামী হচ্ছে। রাছুলপাক সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম আরো বলছেন, “আনা কাশ্শামছ ওয়া আলী আল কামার।” অর্থাৎ আমি হলাম সূর্য এবং আলী হলো চন্দ্র। সুরা রহমানের ৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “আশ্ শামছু আল কামারু বিহুছবান্।” অর্থাৎ সূর্যটি এবং চন্দ্রটি হিসাবের সহিত চলমান। এ সূর্য এবং চন্দ্র জাগতিক আকাশের নয়, মূর্খরা জাগতিক আকাশের চন্দ্র সুর্যকে বুঝে এবং বুঝায়। সূর্য এবং চন্দ্র সম্পর্কে জ্ঞান না হলে এ হাদিসের ভেদ জানা সম্ভব নয়। তবে জানা দরকার মানব সত্তাই হলো চাঁদ তথা নূর মুহাম্মদীর নফসযুক্ত আলোকিত অবস্থাটি হলো চাঁদ। সূর্য আবর্তন করে না, আবর্তিত হয় চাঁদ ; ১২ মাসে আবর্তন করে। সেজন্য ধর্ম জগতে মাসের হিসাব চন্দ্র মাস ধরা হয়। হাকিকতের দৃষ্টিতে ৫+৭ = ১২। প্রত্যেকেই ১২ চন্দ্রবিশিষ্ট। এ ১২-তেই কালেমা, এ ১২-তেই মুহাম্মদের আগমন, ১২-তেই তাঁর বর্তমান অবস্থান। এ ১২ মাসের মধ্যে চার মাস ‘মাসহারুল হারাম’ রয়েছে-যা মুহাম্মদীর নূরী সত্তা বলে বিধৃত। আল্লাহ-রাছুল-মুর্শিদ-একেরই তিন রূপ, যা ১২ মাসের মধ্যেই প্রকাশ ও বিকাশ আছে চিরন্তন-শাশ্বতকালে। পাক পাঞ্জাতনের নবূয়তী, মালাকী এবং বেলায়তীর ভেদ-পরিচয় না জানলে চিরন্তন-শাশ্বতকালের পাক পাঞ্জাতনকে চিনা সম্ভব নয়। এ পাক পাঞ্জাতনই সৃষ্টির মূল নিয়ামক। “আল্লাহু নুরুছ্সামওয়াতে ওয়াল আরদ্ব (সুরা নূর – ৩৫)।” অর্থাৎ আল্লাহ হলে আসমান জমিনের নূর। আসমান-জমিন হলো মানস জগত ও দেহ জগত। বস্তু-গুণ ছাড়া এ সৃষ্টিতে আর কিছুই নেই। আল্লাহর নূর ধরা-ছোয়ার বাহিরে, বেমেছাল ; মহা শক্তির ভান্ডার কিন্তু প্রয়োগহীন। এ নূর যখন আকারে আসে (হুয়ায জাহিরু/‘হু’-এর প্রকাশ), নিজ নূরের মেছাল দেয় (মাছালু নুরিহী) তখন তার নাম হয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালাম। এ মুহাম্মদ রাছুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াচ্ছালামের মধ্যেই আল্লাহর প্রয়োগহীন নূর প্রয়োগে আসে, আসমানী গুণ-কালাম প্রকাশ হচ্ছে। এখান থেকেই সমস্ত সৃষ্টি আরম্ভ। সেই নূরের পরিবাহক মাওলা আলীর বেলায়তী শক্তি সিররি। প্রয়োগহীন নূর প্রয়োগে আসে নবীর আহলে বাইয়্যেতের বেলায়তী শক্তির মাধ্যমে। তাই নবী সম্পর্কে বলা হচ্ছে, “লাওলাকা লা’মা খালাক্তু আফলাক।” অর্থাৎ আপনি সৃষ্টি না হলে আমি কিছৃই সৃষ্টি করতাম না।
আল্লাহর নূর প্রকাশ হয়ে মুহাম্মদ রূপ ধারণ করলো (খালাক্বতু মুহাম্মাদান মিন নূরে ওয়াজহী)। যারা কোরানের হাকিকত তথা মুহকামাত জানে একমাত্র তারাই এ চিরসত্য-শাশ্বত কথাটির ভেদ জানে। যারা শুধু শাস্ত্রবিদ্যায় পান্ডিত্বের অধিকারী বা আরবের ভাষা (আল্লাহর ভাষা আরবী আর আরব দেশের ভাষা আরবী এক নয়, কিন্তু নামে দু’টিই আরবী ভাষা) শিখে পান্ডিত্ব প্রদর্শন করছে তারা অজ্ঞতা-মূর্খতার কারণে জ্ঞানীদের (আধ্যাত্মিক জ্ঞানীদের/ইলমে এলাহীর অধিকারীদের) সমালোচনা করে থাকে।
সৌদি আরবের ভাষায় কোরান নাযিল হয়নি, হয়েছে আরবী ভাষায় (৮৯ঃ৩, ১১১ঃ২)। তা কোন আরবী ভাষাষ নাযিল হয়েছে জানা দরকার, ঐ আরবী ভাষায় কোরান লিপিবদ্ধ আছে লওহ মাহ্ফুজে; পবিত্র মানুষ ছাড়া ঐ কিতাব স্পর্শই করা যাবে না। আরবের ভাষাকেও আরবী ভাষা বলে বিধায় শাস্ত্র কানা পন্ডিতগণ বুঝাচ্ছে সৌদি আরবের ভাষায় কোরান নাযিল হয়েছে, আসলে আল্লাহর ভাষা আরবীকে তারা বুঝতে পারেনি। সে আরবী ভাষা নূরের কলমে নূরের কালিতে লেখা, তা মূলতঃ কোনো জাগতিক বা ধ্বংসশীল অক্ষরে লেখা নয়, উহা অক্ষরাতীত/কদিম নূরী অক্ষর নূরী কোরান। আর আসমানী কালামগুলো স্মৃতি হতে ভুলে যাবে মনে করে আরবের আরবী/ধ্বংশীল অক্ষরে/ভাষায় কোরান লিপিবদ্ধ করে রেখেছে সাহাবায়ে কেরাম-যাকে আমরা এখন কাগজে লিপিবদ্ধ কোরান বলছি। এখন একটু চিন্তা করে দেখুন কোন আরবী ভাষায় এবং কোন কোরান নাযিল হয়েছে। জ্ঞানীগণ বা সত্য মানুষ ঐ কিতাব (জালিকাল কিতাব) পাঠ করছে, আসমানী কালাম লাভ করছে-ইহা ধর্ম জ্ঞানীর নিকট বুঝতে হবে এবং তারা আল্লাহর ভাষা আরবীতেই আল্লাহর কালাম লাভ করছে। কাগজে লিপিবদ্ধ কোরানে লেখা আছে ‘জালিকাল কিতাব’, তা না চিনলে কাগজের কোরান পড়লে কি হবে ! কাগজে লিখিত কোরান ‘জালিকাল কিতাব’-কে সত্যায়িত করছে। যা লেখা আছে পান্ডিত্ব বাদ দিয়ে তা জ্ঞানীর নিকট যেয়ে চিনো, চোখ খুলে যাবে।