রেফারেন্স – কওমী মাদ্রাসা – ওহাবী খারেজীবাদ প্রচারকেন্দ্র

সংকলন – লাবিব মাহফুজ চিশতী

প্রবল ধর্মীয় আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ সম্পন্ন একটি ভূখন্ড হলো ভারতীয় উপমহাদেশ। যেখানকার এই আধ্যাত্মচেতনাকে ধূলিস্মাৎ করার জন্যই পরিকল্পিত ভাবে বিস্তার লাভ করছে ওহাবী-খারেজী মদদপুষ্ট কওমী দল বা দেওবন্দী দল বা কওমী মাদ্রাসা । যারা সূচারুরূপে সম্পন্ন করছে মানুষের ঈমান হরণের কাজ।

ওহাবী খারেজী মতবাদকে লালন করে তারা প্রচার করছে ওহাবীবাদ, সালাফীবাদ বা তাবলীগি মতবাদ সহ নানা ধরণের ধর্মবিধ্বংসী মতবাদ। আমাদের সাবধান থাকতে হবে সকল কুচক্র বা ধর্মনাশকারী মতবাদসমূহ হতে।

আমাদের দেশে কওমী মাদ্রাসা সমূহে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে ওহাবী বাদ। যাতে শিক্ষার্থীরা তৈরী হচ্ছে অলীবিরোধী, বাইয়াত বিরোধী কূপমন্ডুকে। হারা হচ্ছে ঈমান।

আরবি শব্দ কওম একই অর্থে ফার্সি ও উর্দুতেও ব্যাবহৃত হয়। যার অর্থ হল গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, জনগণ সম্পর্কিত। কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাকে কেন্দ্র করে চারটি ধারা চালু আছে।

  • ১. কিতাব বিভাগ বা দরসিয়াত
  • ২.মক্তব বিভাগ
  • ৩.সহীহ কোরআন শিক্ষা
  • ৪.হিফজুল কোরআন।

যেহেতু এ ধরনের মাদ্রাসা সরকারি সহায়তার বাইরে জনগনের দানের টাকায় পরিচালিত হয় তাই একে কওমী মাদ্রাসা বলা হয়।

বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসা সংখ্যা ১৮,০০০হতে ২০,০০০। ২০১৫ সালের ব্যানবেইস এর হিসাব অনুযায়ি দেশে কওমী মাদ্রাসা সংখ্যা ১৩,৯০২টি। যেখানে ছাত্র সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ (প্রথম আলো ২৯-০৯-২০১৬)। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের মতে দেশে কওমী মাদ্রাসা র সংখ্যা ২৬ হাজার থেকে ২৮ হাজার। অধ্যাপক আবুল বারাকাতের মতে দেশে মোট ৫৫ হাজার কওমী মাদ্রাসা রয়েছে। যা সরকারি মাদ্রাসার তুলনায় অনেক বেশি।

সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত কওমী মাদ্রাসাঃ দারুল উলুম দেওবন্দ।

কওমী মাদ্রাসা দ্বীনের ছদ্মনামধারী এক ধরনের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ৩১-০৫- ১৮৬৬খ্রি. বর্তমান ভারতের ইউপি রাজ্যের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে। কওমী মাদ্রাসা সরকারি আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হয় না। সরকারি সহায়তার পরিবর্তে দ্বীনি মুল্যবোধহীন সাধারন জনগনের দানের টাকায় পরিচালিত হয় এ মাদ্রাসা।

দুই শব্দ বিশিষ্ট সংযুক্ত নাম দেওবন্দ যার বাংলা অর্থ হলো দেও মানে শয়তান, ভুত, পেত্নী, দৈত্য, জঘন্যতম পাপাত্মা ইত্যাদি। বন্দ মানে দল, জামায়াত, গোষ্ঠি ইত্যাদি। উভয় শব্দকে একত্রিত করলে অর্থ দাড়ায় দৈত্য দানবেন দল, শয়তানের দল, ভুত পেত্নির গোষ্ঠী। রোমানিয়াতে বালবাক নামের অনুরুপ একটি শহর আছে যার অর্থ ভুতের শহর। হিন্দু ঐতিহাসিকগণ বলেন, দেওবন্দ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ঐতিহাসিক স্থানের নাম। তথায় তৎকালে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের স্ব স্ব ধর্মীয় কাজ করতো। সে স্থানে তৎকালে শত শত পতিতা বাস করতো। পূর্ব হতে তথায় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক আড্ডাখানাটি আজও বিদ্যমান।

দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন সাব কমিটির সদস্য বৃন্দঃ

  • ১.মৌলবী মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি
  • ২.মৌলবী আহমদ হাসান আমরুহী
  • ৩.মৌলবী আজিজুর রহমান দেওবন্দি
  • ৪.মৌলবী আশরাফ আলি থানভী
  • ৫.মৌলবী আব্দুর রহমান রায়পুরী
  • ৬.মৌলবী হাবীবুর রহমান দেওবন্দি
  • ৭.মৌলবী আশেকে এলাহী দেওবন্দি
  • ৮.মুফতি কেফায়েত উল্লাহ(ছাত্র সংগ্রাহক)
  • ৯.মৌলবী কাশেম নানুতুবি(প্রধান শিক্ষক)
  • ১০.মৌলবী রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী(সেক্রেটারি জেনারেল)।

ভারতীয় উপমহাদেশে দেওবন্দকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে ওহাবীবাদের দল। যারা ওহাবী-সালাফী মদদপুষ্ট হয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে প্রচার করতে থাকে বিকৃত ও ধিকৃত ওহাবীবাদ। কওমী দেওবন্দ কে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে ধর্মবিনামের আরেক মহামারি তাবলীগ জামাত। যারা দ্বীন ইসলাম ইতোমধ্যেই অনেকাংশে রদবদল করে ফেলেছে।

ভারতীয় উপমহাদেশ ধর্মীয়-আধ্যাত্মিক মূল্যবোধে দেশ। এ আধ্যাত্মচেতনাকে জনগনের মন থেকে মুছে দেওয়ার জন্য তারা সম্মিলিত ভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। তাদের একটি দল আবার সাধারন মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য পীরের বেশে ওহাবী মতবাদ প্রচার করছে।
আমাদের সাবধান থাকতে হবে, কওমী-ওহাবী চক্র যেনো আমাদের ঈমান নষ্ট করতে না পারে।

সংকলক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

আপন খবর