লেখক – ফরহাদ রহমান দিনার
ধর্ম তো সেটাই যা মানুষকে এক হয়ে প্রেম-শান্তি-সাম্যের পথে বাঁচতে শেখায়, সাম্প্রদায়িকতাটাই ধর্ম নয় । কিন্তু সাম্প্রদায়িকতাটাকেই মানুষ ‘ধর্ম’ হিসেবে ধরে নিয়েছে এবং মেনেও নিয়েছে । শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে মানুষ বেড়ে উঠছে ধর্মীয় পরিচয়ে, সাম্প্রদায়িক আইডিতে । ধর্মীয় সাইনবোর্ড একজন মানুষের পরিচয় হতে পারে না; ধর্মের পরিচয়ে একজন মানুষ বেড়ে উঠতে পারে না । কারণ, ধর্ম কখনোই মানুষের চেয়ে বড় নয়, এই মানুষের উর্ধ্বেও নয় ।
আজ বৌদ্ধ-খৃস্টান হিন্দু-মুসলমানের সংখ্যা ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে অনেক কমে গেছে । প্রচলিত ধার্মিকের(?) সংখ্যা ব্যাপকহারে বেড়ে চললেও, প্রকৃত মানুষের সংখ্যা অধিক হ্রাস পেয়েছে । আমরা যুগে যুগে হিন্দু হয়েছি, মুসলিম (?) হয়েছি, বৌদ্ধ-খৃস্টান হয়েছি কিন্তু ‘মানুষ’ হতে পারিনি; তাই দিন যত যাচ্ছে মানুষে মানুষে বিভেদ, বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতা তত বাড়ছে; এবং বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে মহা মানবগণের সাম্যবাদী শিক্ষা ও ভাবদর্শন । ফলে, হিংস্রতা ও সাম্প্রদায়িকতার অপর নামই এখন হয়ে উঠেছে ধর্ম । অথচ সাম্যবাদ, প্রেমবাদ, ভাববাদ, শান্তিবাদের প্রতীক হিসেবে থাকার কথা ছিল এই ধর্ম । মূলত ধর্মের সৃষ্টিই হয়েছিল মানুষের মুক্তির জন্য; ধর্ম গ্রন্থের সৃৃষ্টি হয়েছিল মানুষকে আলোর পথ দেখানোর জন্য; ধর্মীয় দালানকোঠাগুলো গড়ে উঠেছিল মানুষের কল্যাণ ও বিশ্ব শান্তির জন্য ।
ঐশী বার্তা: “গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান”(কবি নজরুল)। তাহলে ধর্ম কি জন্যে একজন মানুষের পরিচয়ের মাপকাঠি হতে যাবে? মানুষ বেড়ে উঠবে মানুষের আইডিতে, কোনো ধর্মের আইডি বা সাম্প্রদায়িক পরিচয়ে নয় । বিধাতা বারবার চেয়েছেন তাঁর প্রতিনিধি পাঠিয়ে ধর্ম মুক্ত এক অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী জীব সমাজ তথা প্রেমের বুনিয়াদ গড়ে তুলতে, কিন্তু নির্বোধদের মগজে তা জায়গা করে নিতে পারে নি । মানুষ সম্প্রদায় প্রিয়, গোত্র প্রিয় । নিজেরা বিভিন্ন দলে, গোত্রে, জাতিতে ভাগ হয়ে যেতে ভালবাসে । সাম্প্রদায়িক দলে বিভক্ত হওয়া মানুষের সহজাত স্বভাব । অসাম্প্রদায়িক মনোভাব মানুষের ভাল লাগে না, তাই তারা বিভিন্ন দল, মত, পথ সৃ্ষ্টি করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে আছে; এবং সে জন্য তারা খুব তৃপ্তি অনুভব করছে ।
কিন্তু সে ধর্ম এখন মানুষকে মুক্তি দেবার বদলে উল্টো বিপথগামী করছে; সে ধর্মগ্রন্থ এখন প্রেম শিক্ষা দেবার বদলে হিংস্রতার ভাইরাস ছড়াচ্ছে; সে উপাসনালয় এখন মানুষে মানুষে প্রেম মৈত্রী বন্ধন তৈরি করার বদলে বিভাজন তৈরি করছে । অর্থাৎ- যে ধর্ম নাকি মানুষের কল্যাণ ও প্রেম বন্ধনের সেতু হবার কথা ছিল, সেটা হয়ে উঠেছে এখন প্রাণনাশ ও অকল্যাণের হেতু । যে ধর্ম হওয়ার কথা ছিল প্রেম, সাম্য ও শান্তির প্রতীক, সে ধর্ম এখন হয়ে উঠেছে অশান্তি ও হিংসা বিদ্বেষের একমাত্র ক্ষেত্র ভূমি । শুধুমাত্র ধর্মকে কেন্দ্র করে পৃথিবীতে যত অশান্তি, কলহ, দ্বন্দ্ব, যুদ্ধ ও রক্তপাত হয়েছে অন্য কোন কিছুকে কেন্দ্র করে পৃথিবী এতোটা আর্তনাদ আর হাহাকারে ভাড়াক্রান্ত হয়ে উঠে নি । সত্যি কথা বলতে কি, পান্ডা-মৌলভিদের মাতলামির কারণে ধর্ম এখন বেশ সন্ত্রাসবাদী ব্যাপারে পরিণত হয়েছে; ধর্ম এখন মহা আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
কলুষিত মৌলবাদ এর ছোয়াতে ধর্মপথগুলো সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় কেবিনে পড়ে আছে; গোঁড়াবাদের পরশে ধর্মগ্রন্থগুলো এলকোহল সমৃদ্ধ নেশাদ্রব্যে পরিণত হয়েছে; প্রচলিত ধার্মিকগুলো ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে; আর ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো পরিণত হয়েছে ধর্মান্ধ-উগ্র-মাতালের আড্ডাখানাতে !! ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- সকল ঐশী পুরুষই প্রচলিত ধর্মীয় ব্যবস্থা তথা ধর্মীয় মৌলবাদের ঘোর বিরোধী ছিলেন । মৌলবাদী তাণ্ডবলীলার সামান্য চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এক সাক্ষাতকারে মরমি কবি বাউল শাহ্ আব্দুল করিম বলেছিলেন: “প্রচলিত ধর্ম-ব্যবস্থা আমাদের মধ্যে সম্প্রদায়গত বিদ্বেষ তৈরি করে দিয়েছে । কতিপয় হীন মোল্লা-পুরুত আমাদের ভাইয়ে ভাইয়ে বিভাজন নিয়ে এসেছে । এই বিভাজনই যদি ধর্ম হয় তবে সেই ধর্মের কপালে আমি লাত্থি মারি ।
সবার উপরে মানুষ সত্য- এই হলো আমার ধর্ম । নামাজ রোজার মতো লোক দেখানো ধর্মে আমার আস্থা নেই । আমি কখনোই আসমানী খোদাকে মান্য করি না । মানুষের মধ্যে যে খোদা বিরাজ করে আমি তাঁর চরণেই পুজো দেই । মন্ত্রপড়া ধর্ম নয়, কর্মকেই ধর্ম মনে করি । লাখ লাখ টাকা খরচ করে হজ্জ্ব পালনের চেয়ে এই টাকাগুলো দিয়ে দেশের দুঃখী দরিদ্র মানুষের সেবা করাটাকে আমি অনেক বড় কাজ মনে করি । কতিপয় কাঠমোল্লা ধর্মকে তাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে । এই মোল্লারা ইংরেজ শাসনামলে ইংরেজী পড়তে বারণ করেছিল; এই মোল্লারা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল । আজো মোল্লারা তাদের দাপট সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে । এগুলো দেখে মনে হয় একাই আবার যুদ্ধ করি ! একলাই আবার লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ি ! জীবনের ভয় এখন আর করি না । আরেক যুদ্ধ অবধারিত হয়ে পড়েছে, এছাড়া আর মুক্তি নাই”(এ কথাগুলো বলার সময় মহর্ষি করিমের দু’চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল)!!
ধর্মের নামে এই বিভাজন মানবতাকে আজ বিপন্ন করেছে, বিশ্ব শান্তিকে বিনষ্ট করে দিয়েছে । অথচ কোন মহামানবই নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের বার্তা নিয়ে আসেন নি, আলাদা আলাদা ধর্ম নিয়ে আবির্ভূত হন নি । তাঁরা জগতে প্রেম, সাম্য ও শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন । কিন্তু তাদের কিছু কিছু নির্বোধ অনুসারীরা সেটাকে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মে বিভক্ত করে তা মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন; সৃষ্টি করেছেন বৌদ্ধ ধর্ম, মুসলিম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম, ইহুদি ধর্ম, খৃস্টান ধর্ম ইত্যাদি ।
অথচ প্রেমের কোনো ধর্ম নাই; শান্তির কোন ধর্ম হয় না, হতে পারে না । দরবেশ লালনের ভাষায়: “আল্লাহ হরি ভজন পূজন, সকলই মানুষের সৃজন”; মওলানা রুমি এর ভাষায়: “সকল ধর্মই প্রেমের কথা বলে, অথচ প্রেমের কোনো ধর্ম নাই”!! প্রকৃতপক্ষে কোনো ঐশী মতাদর্শই সাম্প্রদায়িকতাকে পছন্দ করেন না, ধর্মের ভিন্নতাকে সমর্থন করেন না । এ জন্যই কোরানে মানুষকে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম তথা নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের আইডি বা নাম ধরে ডাকা হয় নি, বরং ‘হে মানবজাতি’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে ।
কিন্তু পরিতাপের বিষয়- কোরানের সেই ভাবধারাকে সমাজ থেকে মুছে ফেলা হয়েছে । তাইতো দরবেশ লালন এর আক্ষেপ: “এমন মানব সমাজ কবে গো সৃজন হবে, যেদিন হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খৃস্টান জাতি-গোত্র নাহি রবে”!! বিধাতা একাধিক ধর্ম প্রেরণ করেন নি । কারণ কোনো সত্যের থাকতে পারে না একাধিক ব্যাখ্যা, একাধিক তত্ত্ব, একাধিক দর্শন । একাধিক ধর্ম সৃষ্টির পিছনে সকল অবদান নির্বোধ মানুষেরই, বিধাতার নয় । সুতরাং একই সময়ে সবগুলো ধর্মই সত্য হতে পারে না । ভুল অংকের ফলাফল বহু এবং বিভিন্ন হয়; কিন্তু শুদ্ধ অংকের ফল হয় এক ও অভিন্ন । প্রেরিত পুরুষ শ্রীকৃষ্ণও চেয়েছিলেন ধর্ম মুক্ত প্রেমবাদী এক বিশ্ব গড়ে তুলতে । তাই তিনি ঘোষণা করেছিলেন: “সকল ধর্ম পরিত্যাগ করে আমাতে স্মরণ লও”; কিন্তু অবোধেরা সে কথার অর্থ বুঝে নি । নবি মোহাম্মদও এমনটাই চেয়েছিলেন ।
কিন্তু উমাইয়া আব্বাসিয়দের গভীর ষড়যন্ত্রে মহানবির সাম্যবাদী ভাবদর্শন আমাদের নিকট পর্যন্ত আসতে পারে নি । নবি মোহাম্মদ ভিন্ন কোন ধর্ম নিয়ে আবির্ভূত হন নি । তিনি নতুন কোন ধর্ম প্রচার করতে আসেন নি, পৃথিবীতে তিনি প্রেমবাদ ও শান্তিবাদের বীজ বপন করতেই এসেছিলেন; গোঁড়ামি ও কুসংস্কার মুক্ত, একটি ধর্ম-নিরপেক্ষ ও সাম্যবাদী বিশ্ব গড়তে এসেছিলেন । পথপ্রদর্শকগণ কখনোই নির্দিষ্ট কোনো গোত্র বা ধর্মের জন্য আবির্ভূত হন না, তাঁরা শিক্ষকের ন্যায় সকলের, আলোর ন্যায় সবার জন্যই আবির্ভূত হন । কোনো মহামানবই ঘোষণা করেন নি যে: তিনি হিন্দুর জন্যে এসেছেন, তিনি মুসলমান কিংবা বৌদ্ধ জাতির জন্য এসেছেন । মহামানবগণ বিধাতার ন্যায় অধার্মিক তথা ধর্মনিরপেক্ষ । বিধাতার কোনো ধর্ম নেই, জাত নেই; বিধাতা অধার্মিক, তিনি নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের নন, জাতের নন । তিনি সব মানুষের ।
এক অধার্মিক সত্ত্বার নামই তো পরম তথা প্রভু; কিন্তু ধর্ম ডাকাতরা নিজেদের স্বার্থে স্রষ্টাকেও ধার্মিক বানিয়ে ছেড়েছেন !! কিন্তু আমরা ধর্মীয় পরিচয়ে বেড়ে উঠতে চাই না, মানুষের পরিচয়েই বাঁচতে চাই । এমন একটি মানব সমাজ গড়ে তোলা আজ জরুরী হয়ে পড়েছে, যে সমাজে থাকবে না কোনো বৌদ্ধ-খৃস্টান, থাকবে না কোনো হিন্দু-মুসলমান, থাকবে কেবল মানুষ । থাকতে পারবে না আলাদা আলাদা কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ।
ধর্মের নামে জোব্বা জাব্বা, টুপি, দাঁড়ি, পাঞ্জাবি, টিকি, পাগড়ী, লাল, সাদা, কালো, গেরুয়া ইত্যাদি রঙের কোনো ইউনিফর্ম বা ধর্মীয় সাইনবোর্ড তথা লেবাশের প্রচলনও থাকতে পারবে না । ধর্ম তো মনের বিষয়, আভ্যন্তরীণ বিষয়; এটা লোকদেখানো এমন কোনো বিষয় নয় যে, ধর্মকে তার কথায়, ভাবে, পোশাকে, আচরণে, লেবাসে ফুটিয়ে তুলতে হবে, বাহিরে প্রকাশ করতে হবে । ভিতরের সত্য রূপটি নষ্ট হয়ে গেলেই নাকি বাহিরের সাজসজ্জার অত্যধিক প্রয়োজন হয় । টুপি-দাঁড়ি, পাগড়ি, জুব্বা-জাব্বা, সেলোয়ার কামিছ মার্কা ধর্মের নাম ইসলাম নহে । যদিও এজিদের রেখে যাওয়া লেবাসধারী, বাহিরের সাজসজ্জা ও আনুষ্ঠানিক ধর্ম চর্চাকেই বেঁহুশেরা ‘ইসলাম’ ভেবে বসে আছে ।
সুতরাং, বন্ধুগণ ! ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে, সমাজ পরিবর্তনের যুগ এসেছে । প্রচলিত ধর্মমত সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে । মৌলবাদের কবল থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে; আগত শিশুদেরকে গড়ে তুলতে হবে মরমীবাদের আলোকে । প্রিয় বন্ধুগণ, সত্যের সাথে মিথ্যার সংঘাত চিরকালের । তাই আসুন আমরা কষ্টিপাথরে সোনা যাচাইয়ে সত্য পথের সন্ধানে আরও সচেতন হই, আরও যত্নবান হই, আরও সচেষ্ট হই !! ভবিষ্যত প্রজন্মের নিরাপত্তা বিধান কল্পে সমগ্র জাতিকে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামতেই হবে, নইলে বিশ্ব শান্তি সুদূরপরাহত । সত্যবিবর্জিত মোল্লা-পুরুতের বৃত্ত সমূহকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে । কারণ দাঁড়িওয়ালা, ভুঁড়িওয়ালারা মানবজাতিকে করেছে বিভক্ত, মানবতাকে করেছে বিনষ্ট । ঈশ্বর-আল্লাহর অবস্থান, পরিচয়, স্বভাব, ঠিকানা, প্রতিকৃতি ইত্যাদি এই মানুষেই (ঐশীমত) ।
কিন্তু প্রচলিত ধর্ম আল্লাহ-ভগবানকে ‘এই মানুষ’ থেকে দূরে সরিয়ে দেবার কারণেই জন্ম নিয়েছে জঙ্গীবাদ । অথচ কোরানে অসংখ্যবার ঘোষণা করা হয়েছে যে: “আমার বান্দা যখন আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তখন বলো যে- আমি তাদের সাথেই আছি”(সূরা বাকারা)। মানুষ আদি, মানুষই অন্ত, মানুষ বাতেন, মানুষই দৃশ্য । হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী তাই বলেন: “মানবদেহ বিশ্বজগতের নমুনা”।
যার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কবি নজরুল প্রকাশ করেন: “তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব, সকল কালের জ্ঞান; সকল শাস্ত্র খুঁজে পাবে সখা, খুলে দেখো নিজপ্রাণ”। প্রকৃতপক্ষে ইহকাল ও পরকালে এই ‘মানুষ’ই একমাত্র সারসত্য; যেদিন সমগ্র মানবজাতি এ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে, সেদিন থেকেই ‘মানুষ’ ধরে ‘মানুষ হওয়ার’ চাপাপড়া মোহাম্মদী ইসলাম পুনরায় জাগ্রত হয়ে উঠবে; জীর্ণ মতবাদ সব ইতিহাস হবে; অধর্মের যত আবর্জনা স্তূপীকৃত হয়ে উঠেছে, মাথাচাড়া দিয়ে জেগেছে- ভেঙ্গেচুড়ে সব নিশ্চিহ্ন হবে; ফলে, আগত শিশুরা সুন্দর পরিবেশ পাবে এবং মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অশুভ ঝড় থেমে গিয়ে পৃথিবী আবার শান্ত হবে !!