অনুকাব্য – বিচিত্র তব সৃষ্টি লীলা

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

1.
অমৃত খুঁজেছি আমি বৃথায়
অনিত্যের ভাগাড়ে,
খুলিনিকো প্রাণ,পাইনিকো সুধা,
চন্ডাল ঠকিয়েছে মোরে।

2.
ডাকিবো না তোমারে আর গাহিবো না গান
তোমার তরে খুঁজিবো না পরশিবো প্রাণ।
প্রাণেতে সে প্রাণময়,নিভৃতে হিয়ার
লুকিয়ে রয়েছে প্রভু মানবের ভিতর।

3.
শশ্মানে শব না খুঁজে খুঁজো যদি ফুল
গলিত দেহ গন্ধ শুধু করিবে ব্যাকুল।
পাবেনা শকুন ছাড়া বৃথা আহাজারি
সর্ব মুর্খ গো ভাগাড়ে শুধু কেঁদে মরি।

4.
দৃষ্টি পথে তব হে মহিয়ান
বিচিত্র তব সৃষ্টি লীলার মাঝে মেলিয়া নয়ন,
অবাক বিস্ময়ে, মুগ্ধ চাহনী তব ফিরিছে মম দ্বারে
জানি অপলক নেত্রে তুমি দেখিছো আমারে!
ক্ষুদ্র, রিক্ত, অযুত বন্ধনে সিক্ত মোর এ মানব তরণী,
অসীম প্রেমোময়, সসীম এ তরী পরে, তব গর্বিত চাহনী।

5.
নদীর বুকে জোনাক যখন, ঢেউয়ের তালে নাচে,
ইশারাতে জাগায় তৃষা, হৃদয় যারে যাচে।
সে তো থাকে ওপার নদীর, এ পাড় কাঁদে বিরহে যার
ফুল পারিজাত গন্ধ বিলায়, যাহার নয়ন আঁচে
সে বিরহী আমায় ছেড়ে কেমন করে বাঁচে?

6.
তোমারী গান, গাহিছো প্রভু তুমি
আমারী বীণা মাঝে, সাধিয়া সুর,
যতনে গড়া মোর বাসর মাঝে
বসিছো আসিয়া তুমি না হয়ে সুদূর।

7.
আমি চলে যাবো, রয়ে যাবে মোর প্রাণ
প্রাণের প্রতি পরতে পরতে, জাগিবে সে অমলিন।
মহাকালের স্রোতে ছুটিবে সে, আপনার গতিপথে
আপনার মাঝে সকলেরে সে, রাখিবে আপনাতে
হবে না কভূ তার ক্ষয় –
অনন্তের মাঝে অনাদী সে প্রাণের, হবেই নিত্য জয়।

8.
মরমে আমার হুঁশের হানি, হল প্রিয় সেদিন হতে
যেদিন তুমি আঁখি তুলে চাইলে আমার নয়ন পাতে!
ঐ ডাগর আঁখির সরশ চাওয়া, করলো অবশ আমার হিয়া
সব ভুলে তাই তোমার প্রতি, চরণ পদ্মে বাধলাম হিয়া।

9.
আপনারে নিয়েছি কি আপন করে
ক্ষণে ক্ষণে তাই শুধূ হারাই নিজেরে,
হারানোর এ সুখ মাঝে, ফিরে পাওয়ার তৃষা
মুহুর্তকালে জাগে হৃদয়ে, অন্তরে।

10.
হৃদয় তটতীরে আসিল সন্ধ্যা
ঘন আবীর-রাগে,
এমন করে লুকালো কে যেনো
জিবন নিশীথ ভাগে।
আজ অচেনা যত পথহারা প্রাণ
খুঁজে কারে নিরালায়,
সে বিরহী কাঁদে সুদূর নিকটে
না পাওয়ার বেদনায়।

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

আপন খবর