লাবিব মাহফুজ
কেন এলাম এ ক্রান্তি লগনে আজ
যে লগনে নেই কোনো মূল্য সে আবেগের –
ভরা সন্ধ্যায় বাঁশ বাগানের মাথায় জেগে ওঠা সে চন্দ্রের
গোধূলীর রক্তিম সূর্যের আজকে এ কেমন সাজ।
যে গোধূলীতে পদ্মার বালুচর বুক পরে
বালু দিয়ে ঘর উঁচু করে তুলি, দেখি এ হৃদয় ভরে।
যে দেখায় নেই কোনো ভুল, প্রতারণা, পরনির্ভরতার ছাপ
ঢেউয়ে ভেসে গেলেও যা স্বর্ণময়ী, জেগে থাকে হৃদয় কুটিরে!
আজকে এ হৃদয় কোন সে আশায়, কামনায়, বাসনায়
খুঁজে পেতে চায় কোন সে ভাষা, অব্যক্ত তৃষ্ণায়।
অস্থির যান্ত্রিকতার আলস্য বেড়াজাল মুক্ত পদ্মার পাড়ে
এ মনের গান, হয়ে এ নদীর তান, নাচায় যেন এ হৃদয়।
ভালোবাসাহীন, প্রেমহীন আজ স্পন্দনহীন হৃদয় মাঝে
কোনসে কথার কঠিন এ সুর, দোতরা হয়ে বাজে।
আমার দৃষ্টিহীন চক্ষু শুধু নয়, বিশ্বমায়ের সমস্ত সন্তান
ভুলিল কি করে পাষান হৃদয়, উজ্জ্বল রঙিলা সাজে।
কি মূল্য আছে ভরা এ চাঁদের এমনো পূর্ণিমা রাতে
যার স্নিগ্ধ আলো মায়ার বাধন, বাঁধিছে হাতে হাতে –
যার নেইকো রূপ, নেইকো সাজ, নেইকো মুখে সে বাজ
তাইতো সে এতো মনোহর, যার দাম মিটবেনা টাকাতে।
অঙ্গে কৃত্তিম সাজ, নির্লজ্জ বাক্যে প্রকাশিত যে চন্দ্রবদন
মরিয়া হয়ে পড়িতেছে যে,করিতেছে মিথ্যার জয়গান।
সেইতো আজি শাশ্বত সুন্দর, উদ্ভাসিত চারদিকে
আমরা কত শত মহাজ্ঞানী আজ, পূজিতেছি তার চরণ।
আবেগ সেতো ঘরছাড়া আজ পথহারা দিকহারা
তাকে জায়গা দিয়ে নব ঘরে, মরবে কে আর, এমন পাগল পারা?
মেধা সেতো উলঙ্গ প্রায়, উঠেছে দাড়িপাল্লায়
প্রতি দিকে দিকে, প্রতি পদক্ষেপে তার নির্মম বিক্রিধারা।
এসবের মাঝে দাড়িয়ে কেনো একাকী এ আমি
ব্যার্থ কান্না কেঁদেই চলেছি শুনেনা অন্তর্যামী!
উদাসী মন, বিবাগী মন, গৃহছাড়া এ হৃদয়
তাইতো নিরালা একাকী নির্জনে, পদ্মায় লুকাইতে চায়।
রচনাকাল – 01/01/2013