লাবিব মাহফুজ
আদিম অন্ধকারে
দুরাশার এক অতৃপ্ত, নির্লিপ্ত পাথারে
ফেলেছিলাম আমার ইন্দ্রজাল –
ধরিতে আমারে।
যেথা ছিল আধার, শুধুই আধার
এক অনন্ত শুণ্যতার –
এ বহ্নিস্রোতের দূর্বার বেগ, অনন্ত গতি
অপূর্ণ পারাবার!
তথা হতে মোর প্রদীপ্ত আঁখিনীড়ে
তাকালাম আবার খুঁজিতে আপনারে
আধারের বুক চিড়ে সুউচ্চ আধার হইল দীপ্তিমান
দেখিলাম আমার প্রাণ!
আধারের প্রতি অণুতে অণুতে
চির ভাস্বর, অম্লান।
সে হতে আমি খুঁজে ফিরি মোরে আধারের জোছনায়
উন্মত্ত ছন্দে পথ চলা মোর, তন্বী সাকীর আধার সুরায়।
এ অন্ধকারের জয়গান
যে আধার হারায়ে নিজেরে খুঁজে ফিরে পায় প্রাণ।
আমিতো চলেছি আপনায়
বুকে লয়ে অমানিশা, মহাকাল স্রোতে
দুরন্ত পূর্ণতায় –
এ কালাকাল মত্ত আপনায়।
আমি দেখেছি আমারে
আদিম হিংস্রতার উন্মত্ত বাসরে।
চারধারে মোর মূর্ত অমূর্ত আধারের কোলাহল
প্রতি প্রস্তরে যার আসিতো ফিরে, আদিম ইথারের দোল
তথায় মেলিয়া ধরে
আপনার প্রাণ চারধারে
আধারের মাঝে দেখেছি আমারে, আমার আপন রূপ
আদিম উন্মত্ততা মোর রন্ধ্রে জ্বালায়েছে, গন্ধ বিধূর ধূপ।
তথায় পুনরায় বরণ করেছি আধারের পূজাঞ্জলী
আধারেরে সঁপেছি ধ্যানের নৈবেদ্য, হৃদয় চন্দন ঢালি।
আমি দেখেছি আমারে
অণুতে অণুতে, অখন্ড অবসরে।
আধারের প্রতি দীর্ঘশ্বাসে, বুক ভাঙা আর্তনাদে
সে নিনাদ ধ্বনি, সৃষ্টির, সৃজতন্ত্রীর, অনন্ত বিষাদে।
আজো খুঁজে ফিরি সে প্রাণ
যে প্রাণখানি কালের গর্ভে হয় না কখনো লীন।
আধারের লয় হৃদি সহস্রারে, অনন্ত যাত্রা পথে
প্রতিজনে, প্রতিক্ষণে দিয়াছি আলোক, অলোক বীণার সাথে।
সে বীণা মোর হস্তে এসেছে মহাকালের পথ ধরে
অন্ধকারের এ প্রাণ তারেই লইয়াছে বরণ করে।
নতশীরে তারে দিয়াছি স্থান
সৃজন প্রলয়ের অন্তহীন কল্যাণ
এনেছি ধরার ধূলায় –
হয়তো রয়ে গেছে এ প্রাণ আমার নিশ্ছিদ্র অমায়।
এ অন্ধকার টানিছে আমারে বুকের করুণ সুরে
স্বলোক ত্যাজিয়া, দুল্যোক ভেদিয়া, ছড়াইতে অসীমেরে।
সে বীণা সুর বাজাইয়া চলেছি অন্তহীন নিশিদিন
এ আধারের তান, অন্ধকার, মোর প্রাণে জাগ্রত অনুক্ষণ।
রচনাকাল – 23/10/2018