হযরত খাজা কাজী বেনজীর হক চিশতী নিজামী
হযরত মাহ্জুরা (রাঃ)-এর মাথার চুল এতো লম্বা ছিল যে, বসলে সেই চুল মাটিতে গিয়ে পড়তো (মাদারেজুন নবুয়ত, ৩য় খন্ড – ১২৭ পৃষ্ঠা)। হযরত মাহ্জুরা (রাঃ)-এর মাথার চুল খুব সুন্দর ছিল। রাছুলপাক (সাঃ) প্রায়ই তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন, মাহ্জুরার চুলগুলো খুব সুন্দর। রাছুলপাক (সাঃ) এর হাতের স্পর্শ কে বিশেষ বরকতময় মনে করে তিনি আর মাথার চুল কাটতেন না। তাই চুলগুলো এতো লম্বা হয়েছিল যে, বসলে তা মাটিতে গিয়ে পড়তো। তা নিশ্চয়ই রাছুলপাক (সাঃ) দেখেছেন। তিনিতো বলেননি, মাহ্জুরা! তোমার মাথায় এতো লম্বা চুল কেনো? এতো লম্বা চুল রাখা তো জায়েজ নেই? হ্যাঁ, নবী করিম (সাঃ) যদি মাদ্রাসায় পড়তেন তবে হয়তো অজ্ঞ-মূর্খদের মতো নাজায়েজ ফতোয়া’ই দিতেন ! কিন্তু তিনি তো ইলমে এলাহীর অধিকারী, নূরে মুজাস্সাম, জাতে এলাহীর মোজহার, খোদার কালাম আর তাঁর কালাম ঐক্যতায় স্থিত (ওয়ামা ইয়ান্তেকু আনিল হাওয়া) বিধায় তিনি ফতোয়াবাজি করেননি, নিজেও বাবরী চুল রেখেছেন এবং যারা বাবরী চুল রেখেছে তারা যেন তা যত্ন করে রাখে তার নির্দেশও দিয়েছেন।
রাছুলপাক (সাঃ) এর হুকুম/নির্দেশ কে ঈমানদারগণ ওয়াজিব বলেই জানেন-মানেন, কাফের-মুনাফেকেরা তার বিপরীত আকিদা পোষণ করবে নিশ্চয়ই। সেজন্যই আহাম্মক-বেকুবেরা তা অবজ্ঞা করে। ওরা নবীজি (সাঃ), তাঁর পবিত্র আহলে বাইয়্যেত এবং ওলী-আউলিয়াদের বিরোধীতা করে নিজেদের আখেরাতকে ধ্বংস করে চলছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হলেন মক্কায় ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবী। মক্কায় যে ছয়জন প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন তার মধ্যে তিনি হলেন ষষ্ঠতম। তিনি হযরত ওমর (রাঃ) এর পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মদিনায় তিনি মসজিদে নববীর পশ্চাতে বাস করতেন এবং তাঁকে ও তাঁর মাকে এতো ঘন ঘন রাছুলুল্লাহ (সাঃ) এর গৃহে যাতায়াত করতে দেখা যেতো যে, অপরিচিত লোকেরা তাদেরকে রাছুলুল্লাহ (সাঃ) এর পরিবারভুক্ত বলেই মনে করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ নবীজি (সাঃ) এর জুতা, মিস্ওয়াক, শয্যা ইত্যাদি বহন করতেন। সে হিসেবে তিনি নবীজি (সাঃ) এর বিশেষ সেবক ছিলেন। বাহ্যিক চালচলনে তিনি নবীজিকে অনুকরণ করতেন। রাছুল (সাঃ) এর সেবক আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর চুল মোবারক ছিল অনেক দীর্ঘ-লম্বা এবং গায়ের রং ছিল লোহিত বর্ণের (সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ২ খন্ড-১৩৮)।
“আচ্ছাওয়াইকুল মুহরিকা” নামক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, যখন সাইয়্যেদেনা ইমাম আলী রেজা (আঃ) নিশাপুরে আগমন করেন তখন তাঁর চেহারা মোবারক একটি পর্দা দ্বারা ঢাকা ছিল। হাফেজে হাদিস ইমাম আবুযর আর রাজী, ইমাম মুহাম্মদ বিন আছলাম তুসী প্রমুখ এবং তাদের সাথে আরো অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী হাদিসের শিক্ষার্থী এসে তাঁর নিকট উপস্থিত হন এবং জোরালো আবেদন করেন ‘আপনার চেহারা মোবারক আমাদের প্রদর্শন করুন।’ ইমাম রেজা (আঃ) তাঁর বাহন থামালেন এবং সেবকদেরকে পর্দা সরাতে আদেশ দিলেন।
পর্দা সরানোর সাথে সাথে জনতার অবস্থা এমন হলো যে, কেউ হর্ষধ্বনি করছিল, কেউ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিল, কেউ মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছিল আবার কেউ বাহনের খুর চুম্বন করছিল। তাঁর রূপ-সৌন্দর্য্য অবলোকন করে জনতার চক্ষু শীতল হলো। এ সময় দেখা গেল, তাঁর পবিত্র স্কন্ধ মোবারকে দুই গোছা লম্বা চুল ঝুলছিল। এ ঘটনাটি ‘মমতাজুল ফাতাওয়া’ কিতাবের ৭৮ পৃষ্ঠাতেও বর্ণিত আছে। অন্য একটি বর্ণনা হতে জানা যায় যে, তাঁর পবিত্র কাঁধ মোবারকে লম্বা চুলের দু’টি বেণী ঝুলছিল। মূলতঃ দু’টি কথারই মূল হলো তাঁর মাথায় লম্বা/বাবরী চুল ছিল। হযরত সাইয়্যেদ মুহাম্মদ গেসু দারাজ (রাঃ) এর রচিত ‘রূহে তাসাউওফ’ কিতাবের শুরুতেই বলছেন, ‘তৎকালীন সময়ে সাইয়্যেদ’দেরকে অর্থাৎ মাওলা আলী ও হযরত ফাতেমা (আঃ) এর বংশধরগণকে ‘লম্বা চুলওয়ালা’ বলেই সবাই সম্বোধন করতো। যেহেতু নবীজি (সাঃ) এর আহলে বাইয়্যেতের মর্যাদা সৃষ্টির ভিতর কারো সাথে তুলনা চলে না, সেহেতু ঈমানদারগণ, ওলী-আউলিয়া, ফকির- দরবেশগণের পক্ষ হতে এক বিশেষ সম্মানসূচক উপাধি হলো ‘লম্বা চুলওয়ালা’। কারণ, তাদের মাথায় লম্বা চুল থাকতো। তাদের সম্মানার্থেও ফকির-দরবেশ, ওলী-আউলিয়া বা তাদের অনুসরণকারীগণ স্বীয় মস্তকে লম্বা চুল রাখতেন। রাছুলপাক (সাঃ) বলেন, “যে যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ/মহব্বত করবে সে সম্প্রদায়ের সাথেই তার হাশর হবে।” হাশরের দিন নিরানব্বই ভাগ রহমতের অধিকারী হবেন আল্লাহর ওলীগণ (তাফসিরে মাযহারী)। তাদের অনুসারীগণই প্রথমে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আল্লামা আবদুর রহমান জামী (রহঃ)-এর বিখ্যাত ‘শাওয়াহেদুন-নবুয়ত’ কিতাবের ৬৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে যে, হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা (রাঃ) আলেকজান্দ্রিয়ার পাদ্রীর ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, আমি হুজুর (সাঃ) এর আবির্ভাবের সময়কালে তায়েফের ব্যবসায়ীদের একটি দলের সাথে আলেকজান্দ্রিয়ায় গেলাম। সেখানে একজন বড় পাদ্রী ছিল। সে সর্বদা ইবাদতে মশগুল থাকতো। লোকজন তাদের রোগীদেরকে তার কাছে নিয়ে যেতো এবং সুস্থ হওয়ার জন্য দোয়া চাইতো। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, পয়গাম্বরগণের মধ্যে কেউ কি বাকি আছে ? সে বললো, হ্যাঁ, একজন বাকি আছেন এবং তিনিই হবেন সর্বশেষ পয়গম্বর। তাঁর ও ঈসার (আঃ) এর মাঝখানে সময়কাল খুবই কম হবে। তিনি না দীর্ঘদেহী, না বেঁটে হবেন এবং না অত্যাধিক শ্বেতকায় হবেন, না কালো। তাঁর চোখে লালিমা থাকবে এবং মাথার কেশ লম্বা হবে। জানা দরকার রাছুলপাক (সাঃ) এর বংশধরদের উপাধি হলো ‘লম্বা চুলওয়ালা’ (ইসলামী বিশ্ব কোষ-২য় খন্ড)। নবীজির কেশ মোবারক, জামা মোবারক, তাঁর হাতে লাগানো গাছের ফল, মুখের লালা, খাকে শেফা, প্রশাব, তাঁর রঁওযার মাটি ইত্যাদি রোগমুক্তি এবং আখেরাতের মুক্তির উছিলাস্বরূপ সাহাবাগণ ব্যবহার করতেন। রাছুলুল্লাহর চুলের বরকতেই মহাবীর খালেদ একাধিক রাজ্য জয় করেছেন। যুদ্ধের সময় ঐ চুল তার পাগড়ীর নিচে থাকতো।
নবীজি (সাঃ)-এর চুল মোবারককে সাহাবাগণ দুনিয়া ও তন্মধ্যে যতো কিছু আছে তার চেয়েও অধিক প্রিয়-পবিত্র, বরকতময় মনে করতেন (বোখারী)। আল্লাহর ওলীদের ব্যবহৃত জিনিস-পত্রও ভক্ত-মুরিদানদের জন্য রোগমুক্তি, আখেরাতের মুক্তির জন্য উছিলাস্বরূপ। ফেরাউন-নমরুদের দলেরা কোনোকালেই তা স্বীকার করে নেয়নি। বিস্তারিত জানার জন্য পড়তে পারেন ‘অন্ধের পথ প্রদর্শন’ বইটি। সুতরাং সাধক-পীর-ফকির-দরবেশদের দীর্ঘ/লম্বা চুলও সেই নূরে মুজাচ্ছাম হাবিবে খোদা মুহাম্মদ রাছুল (সাঃ) এর নূরী চুলেরই প্রতিবিম্ব/প্রতিরূপ। যারা পীর-ফকিরদের লম্বা চুল বা বাবরী দেখে ঘৃণা বা অবজ্ঞার দৃষ্টিতে কথা বলে তারা প্রকারান্তরে রাছুলুল্লাহ (সাঃ) এর লম্বা কেশ মোবারককেই ঘৃণা বা অবজ্ঞা করে। এ ধরনের কাজ স্পষ্ট কুফুরী। কুফরীতে কায়েম থাকলে কাফের হয়ে যাবে। কারণ, রাছুলপাক (সাঃ) লম্বা চুলকে যত্ন করে রাখার হুকুম দিয়েছেন। আর রাছুলুল্লাহর হুকুম পালন করা ওয়াজিব। কখনো কখনো দেখা যায়, সৌদি রাজতন্ত্রের (যদিও বর্তমানে তাদের আকিদায় কিছুটা ভিন্ন মোড় নিয়েছে) দালাল ও লেবাছধারী মোল্লা-মুফতিরা দ্বীনে মুহাম্মদী তথা তরিকতপন্থীদের চুল নিয়ে ফতোয়াবাজির ডিগবাজি খেলছে এবং তাদের চুল কর্তনের জন্য নাপিত সেজে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে থাকে। এরা মূলতঃ ওহাবী কওমী-খারেজী, জামায়াত ও অন্যান্য মৌলবাদী গোষ্ঠীসমূহের লোক। তাদের মধ্যে সবচেয়ে যে জিনিসটির অভাব তা হলো লজ্জা-শরম। সেজন্য তারা সাধক পীর- ফকিরদেরকে অনেক জায়গায় অপমান-অপদস্থ করে থাকে বা চুল, দাঁড়ি- গোঁফ ধরে টানাটানি করে থাকে। ফরিদপুরের এক মাহফিলে লালন অনুসারীদের চুল-গোঁফ-দাঁড়ি নাপিত বেলেহাজ আলেম-মোল্লা এবং তাদের দালালরা কর্তন করে দিয়েছিল, পরে আবার প্রশাসনের চাপে পড়ে মাফও চেয়েছিল। এইতো ২৩শে সেপ্টেম্বর ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা গেল গাজিপুর জেলার ১৬/১৭ বৎসরের এক বাউল সঙ্গীত শিল্পীর বাবরী চুল কয়েকজন নাপিত (ধর্ম সন্ত্রাসী) কেটে দিয়েছিল। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতারও করেছে। ইহাই একদল মোল্লা-মুফতি এবং তাদের অনুসারীদের চরিত্র। ওরা মানুষ মাত্রই নয়, মানব সুরতে পশু মানে নরপশু। পশুত্ব তথা অসুরত্বই তাদের চরিত্র। তাদেরকে চিনতে পারাটাও আল্লাহপাকের বিশেষ দয়ার মধ্যে একটি দয়া। কোরান মতে দেখা যায় চুল ধরে টানাটানি করাটা কোরান বিরোধী কাজ। সুরা ত্বোহা-র ৯৪ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, (হারুন নবী তাঁর ভাই মুছা নবীকে বলছেন), “ক্বালা ইয়াবনাউম্মা লাতা’খুয্ বিলিহ্ইয়াতী ওয়ালা বিরা‘সী, ইন্নি খাশীতু আন তাকূলা র্ফারাক্বতা বাইনা বানী ইসরাঈলা ঈলা ওয়ালাম তারকুব কাওলী।” অর্থাৎ (হারুন বললো) হে আমার সহোদর। শ্মশ্রু/দাঁড়ি ও কেশ ধরিও না, আমি শংকিত ছিলাম যে, তুমি বলবে, তুমি বনী ইসরাঈলদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং তুমি আমার বাক্য মাননি। এরপরও ৪২০ নম্বর তথাকথিত আলেম-মোল্লাগণ তরিকতপন্থীগণের বা ঈমানদারগণের চুল কর্তন করার জন্য অনেক স্থানে জোর-জুলুম এমনকি দল পাকিয়ে আক্রমণ করতে দেখা যায়। দেখতে যেন সঙ্গবদ্ধ হায়েনার দল। আসলেই যদি ওরা মুসলমান হয়ে থাকে তবে কখনো কোরান বিরোধী কাজ বা রাছুলপাক (সাঃ) যা নিজেই করেছেন, তা যত্ন করে রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তার বিরোধীতা করতে পারতো না।
তাছাড়া লম্বা গোঁফ, মোচ রাখার বহু নজীর নবী-রাছুল এবং আল্লাহর ওলীদের পক্ষ হতে দলিল রয়েছে। মাওলানা কাতাদাতা ছেলেদের দ্বারা একজন ফকিরের (বু’আলী কলন্দরের) বড় গোঁফ কাটতে গিয়ে তার সাত ছেলেরই মৃত্যু হয়েছিল। আরেক তথাকথিত আলেম নামক জালেম এক ফকিরের গোঁফ কাটতে গিয়ে দেখলো ঐ ফকিরের মোঁচ আল্লাহর আরশের পায়া পেঁচিয়ে রয়েছে। আবার রাছুলপাক (সাঃ)-এর সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে অনেকে দাঁড়ি মোঁচও রাখতো না। যেমন, হযরত কায়েস, আবদুল্লাহ বিন জোবায়ের, কাজী শুরাইহ্, আহনাফ (রাঃ) প্রমুখ সাহাবাদের মুখে কোনো দাঁড়ি মোঁচ ছিল না। তন্মধ্যে হযরত কায়েস (রাঃ) ছিলেন খুব সুন্দর চেহারার লোক (আসমাউর রেজাল-১৮৭, বঙ্গানুবাদ) এবং তিনি মদিনার আনসারী সাহাবী ছিলেন। তিনি ছিলেন সূক্ষ্ম চিন্তা সম্পন্ন, বুদ্ধিমান ও রণ কুশলী সমর যোদ্ধা। এ ব্যপারে যারা জোর-জুলুম করে তারা নিশ্চয়ই জালেম। জালেম কখনো মুসলমান হতে পারে না, তাদের বাসস্থান জাহান্নামে (কোরান দ্রঃ)। হযরত ইমাম গাযযালী (রাঃ) এর মাথায়ও লম্বা কেশ মোবারক ছিল। বিখ্যাত ওলী হযরত নাসিরুদ্দীন চেরাগে দেহলবী (রাঃ) এর পালকী বাহক হযরত গেসু দারাজ (রাঃ) এর চুল এতো লম্বা ছিল যে, তা পায়ের হাটুর নিচ পর্যন্ত চলে যেতো। ‘গেসু’ অর্থ চুল আর ‘দারাজ’ অর্থ লম্বা যখন তিনি পালকী বহন করতেন তখন ঐ চুল মোবারক পালকীর পায়ে জড়িয়ে যেতো। তাতে তাঁর গুরু/মুর্শিদ হযরত নাসিরউদ্দিন চেরাগে দেহলী (রাঃ) খুশী হয়ে বলতেন, গেসু দারাজ শুধু নিজেই পীরের খেদমত করে না, তাঁর মাথার চুলও পীরের খেদমত করে (মাওলানা মজিবুর রহমান রচিত ‘তাজকেরাতুল আউলিয়া’ ৫ম খন্ডের ১৩৮পৃষ্ঠা, ‘রূহে তাসাউফ’- শুরুতেই বর্ণিত আছে)।