কাজী বেনজীর হক চিশতী নিজামী
ওহে জীব মানবগণ, করো সত্য আকিঞ্চন
হবে ব্যক্ত গোপন তোমার হৃদ আঙ্গিনায় –
ছাড় প্রবৃত্তির ধর্ম, করো নিত্যের কর্ম
হবে নিবৃত্তির ধর্ম এ বসুন্ধরায়।
প্রবৃত্তি আমিত্বময়, নিবৃত্তি তিনিত্বময়
প্রবৃত্তি থাকিতে নয় নিবৃত্তির কর্ম –
ছাড় প্রবৃত্তির কর্ম, পাবে নিবৃত্তির মর্ম
পরম ধর্ম নিত্যের কর্ম।
স্বরূপ স্রষ্টার অভিপ্রায়, প্রকাশিতে বসুন্ধরায়
তাইতো হলে সৃষ্টির বাসনা –
স্রষ্টা আছে কিবা নাই, কে সুধাবে তাই
নহে জীবন বৃথা, তুমি আমি যত জনা।
তুমি আমি যতজনা, মহাসত্যের প্রকাশনা
হলো অনিত্যের সূচনা –
নিত্য হতে অনিত্যে, আবার গমণ নিত্যে
ভ্রমভাব মহা ছলনা।
মহাসত্য নির্গুণ আত্মা, তা হতে ব্যোম তথা
ত্রি-আত্মা তথা জীবাত্মাময় –
দ্বি-আত্মা হইতে যতো, ত্রি-আত্মা প্রকাশিত
জীব আর পরম তাইতো এ ভবময়।
নিরাকার হতে আর, ধরিল জীবের আকার
দ্বি-মিশ্রণে সাকার এই ভূবনে –
জীব ছাড়া নিরাকার নয়, তা বিনে কে স্রষ্টা কয়
স্রষ্টা সৃষ্টি এই ভবময়, গাঁথা একতনে।
সে গোপন আমি প্রকাশ, তাইতো হলো সৃষ্টির বিকাশ
জীবের প্রকাশ বিনে কি তা হয় –
তাই সৃষ্টির আদি মুহাম্মদ, হলো স্রষ্টার প্রেমাস্পদ
সৃষ্টিতে পেয়ে হদ, লুকায় ভূবনময়।
আলাক্ব হতে খালাক্ব করে, মুহাম্মদী হিজাব পড়ে
মাছালু নূরীহি দিয়ে এলো দ্বাদশে –
সেই ছিলো এই হলো, এমকানে ঝলক দিলো
রূপাতীত রূপে এলো আরব দেশে।
সে আমি একাকার মায়াভ্রান্তি পর্দা তার
অভেদ প্রভেদ হলো, হলো দ্বিত্বকার –
হারিয়ে আদি রূপ আমি তুমি বান্দা প্রভু
বিভেদ্য বাসনায় চলে, নিত্য লীলাকার।
এখন জীবে আমিত্ব নিয়া, স্রষ্টার ভাব ছেড়ে দিয়া
আমি তুমি বিভেদ নিয়া তাই –
পড়ে মহা ভ্রান্তির গোলে, কাটিয়ে কাল মায়ার কোলে
আমি তুমি বিভেদ গাই।
আমি আদি আমি অন্ত, তাইতো ছিল মূল মন্ত্র
ভ্রান্তি বশে হলো ক্ষ্যান্ত, ভাবিছি সদায় –
কাটিয়ে মায়াভ্রান্তির পাশ, করো আদ্য মহাশক্তির বিকাশ
হবে আত্মবিভেদ্য বিনাশ, এই ভূবনময়।
গাও সবে সাম্যের গান, বিভেদ নয় সবাই সমান
ভয় কিরে জীবগণ এই ভবেতে –
যথা হতে আগমন তথাস্তঃ হবে গমন
হিন্দু কি মুসলমান আর খ্রিষ্টানেতে।
নিত্য তত্ত্ব মানুষ সত্য, জাগাও তব মনুষ্যত্ব
পরমার্থ শুদ্ধ চিত্ত হইবে যখন –
পরমার্থ পরম ভাব, হৃদে পড়বে তারই প্রভাব
নূরাল্লাহ বিভা রূপ হইবে তখন।
বেনজীর কয় কথা মান, ইহাই স্রষ্টার বিধান
হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান শুধু বাহ্যতে –
সুবাক্য আর সৎ কর্ম, সে পায় স্রষ্টার ধর্ম
সেজনই পূজনীয় এই ভবেতে।