লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী
যখনি প্রয়োজন হয়েছে সংস্কারের, যখনি মানবমন্ডলী সত্য সুপথ ছেড়ে পতিত হয়েছে ভ্রষ্টতায়, তখনি কথা বলে উঠেছেন প্রভু। সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই মানবজাতিকে পথ প্রদর্শণের নিমিত্ত বারবার বাণীর পসরা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। পরিশুদ্ধ মানব মনের গহীনে বেজে উঠেছে তাঁর মহিমান্বিত কন্ঠ।
কখনো প্রভুবাণী প্রতিধ্বনী তুলেছে প্রাচীন ভারতে হিমালয়ের পাদদেশে মৌনী ঋষি/সন্ন্যাসীর কন্ঠে, কখনো তিনি কথা বলেছেন বোধি-বৃক্ষতলে। কখনো গাঙ্গেয় অববাহিকায় তীর্থঙ্করদের কন্ঠে সুর তুলেছেন প্রভু। প্রভু কথা বলেছেন ‘আর’ নগরীতে, জেরুজালেমে। কখনো গ্রীসে উচ্চারিত হয়েছে তাঁর বাণী। প্রাচীন চিনে প্রভু মানবমুক্তির উপায় বাতলে দিয়েছেন কনফুসিয়াস, তাও তে চিং এর সুরে। জরথুস্ত্রের কন্ঠে বাণী যুগিয়েছেন তিনি। সিনাই মরু প্রান্তরে মুসার হৃদয়ে কথা বলে উঠেছেন তিনি। ঈসার কন্ঠে গেয়েছেন মানবমুক্তির গান। হেরা গুহায় মুহাম্মদের তপোস্নিগ্ধ অন্তরে তিনি উচ্চারণ করেছেন মুক্তির বিজয়গাঁথা। প্রভু কথা বলে উঠেছেন নানক কবীরের সংগীতের সুর মুর্ছনায়। কৃষ্ণ-বুদ্ধ-ঈসা-মুসা-মোহাম্মদ সকলেই সেই একই বার্তাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন আপন আপন পরিসরে।
যুগে যুগে প্রভু সকল মুক্ত আত্মায় অধিষ্ঠিত হয়ে আপন বাণী-মাহাত্ম্য কে ছড়িয়ে দেন জগৎময়। অবতার রাসুল রূপে উদ্ধার করেন পতিতদের। তারই কন্ঠে চিরকাল ধ্বনিত হয় একই আহ্বান – হে ঘুমন্ত মানবমন্ডলী! উঠো! জাগো!
সকল মুক্তিকামী আত্মায় মুর্শিদ/রাসুল রূপে বাণী দেন তিনি। প্রতি যুগে, প্রতি জাতিতে, প্রতি দেশে দেশে পরমসত্ত্বা গুরুসত্ত্বায় পর্যবসিত হয়ে ভক্তকে করেন উদ্ধার। দেখান মুক্তির পথ। গেয়ে বেড়ান মুক্তির গান।
“আপন সত্ত্বায় সেই পরম সুন্দরকে যেদিন তুমি জাগিয়ে তুলতে পারবে, সেদিন তুমি ইনছান হবে।”
রচনাকাল – 09/02/2020
লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী