পত্রিকা – সালাত এ মুমিন বান্দার মেরাজ

লেখক – সৈয়দ হুমায়ুন কবীর

হাদীসে আছে সালাত এ মুমিন বান্দা মেরাজ হয়। মুমিন বান্দার এই মেরাজ কার সাথে হয়? আল্লাহর সাথে এই মেরাজ হয় না রাসুল পাকের সাথে এই মেরাজ হয়। কোরআনের আয়াত থেকে যা বুঝা যায় আমাদের কে তাই করতে হবে।

আপনি বলুন, আমি তোমাদেরকে শুধু একটি উপদেশ দিচ্ছি, তা হচ্ছে এই যে, তোমরা আল্লাহর নামে দু ’ দু জন করে ও এক একজন করে দাড়িয়ে যাও! তারপর তোমরা চিন্তা করে দেখ। তোমাদের সাথী তো কোন পাগল নন, তিনি তো আসন্ন কঠোর শাস্তি সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ককারী ছাড়া আর কিছুই নন।(৩৪:৪৬)। তাকে কারো দৃষ্টি প্রত্যক্ষ করতে পারে না। তিনি দৃষ্টিকে আয়ত্ত করেন; তিনি সুক্ষদর্শী জ্ঞানময়। (৬:১০৩) । অবশ্য তোমার কাছে এসেছে রবের পক্ষ হতে জ্ঞান- চক্ষু। সুতরাং যে দেখে কল্যাণ তারই, অন্ধ সাজলে তারই ক্ষতি আর আমি পর্যবেক্ষক নই।(৬:১০৪)।

উপরোক্ত কোরানের আয়াত (৩৪:৪৬) তে বুঝা যাচ্ছে নামাজে সালাতে রাসুল (সা) কে বুঝতে হবে। আয়াত নম্বর (২০:১১০,৬:১০৩,৬:১০৪) তে বুঝা যাচ্ছে আল্লাহকে জ্ঞান দিয়ে আয়ত্ত্ব করা যাবে না, চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখা যাবে না, আল্লাহর জ্ঞান চক্ষু বিশিষ্ট রাসুল (সা) কে দেখলে কল্যাণ তারই। অন্ধ সাজলে সে ইহকালেও অন্ধ, পরকালেও অন্ধ। সরাসরি আল্লাহকে দেখার কোন উপায় নেই- নবী রাসুল ছাড়া। বাস্তবে হউক-স্বপ্নে হউক, সালাতে হউক আল্লাহকে দেখার কোনো উপায়-কায়দা পদ্ধতি নাই। বাস্তবে স্বপ্নে সালাত এ রাসুল (সা) কেই দেখতে হবে। সালাত -নামাজে রাসুল (সা) এর সাথেই মেরাজ হবে- মুমিন বান্দা নামাজে – সালাত এ রাসূল (সা) কে দেখবে।

সুরা ইউনুস – আর এমন অনেক আছে যারা আপনার প্রতি কান রাখে, তারা না বুঝলেও কি আপনি বধিরকে শ্রবন করাবেন? তাদের কেউ কেউ আপনার প্রতি দৃষ্টি রাখে তারা না দেখলেও কি আপনি অন্ধকে পথ প্রদর্শন করবেন?(৪২,৪৩)

সুরা যুখরফ – আপনি কি শুনাবেন বধিরকে? না অন্ধকে পথ দেখাবেন? যে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত। (৪০)
সুরা বনী ইসরাইল – আর যে ব্যাক্তি ইহকালে অন্ধ হবে সে ব্যক্তি পরকালেও অন্ধ হবে এবং পথভ্রষ্ট হবে। (৭০)
সুরা আরাফ – তাদের কে সৎপথে ডাকলে তারা কিছুই শুনবে না। এবং আপনি দেখবেন যে আপনার দিকে তারা চেয়ে আছে অথচ তারা কিছুই দেখে না।(১৯৮)

সুরা নিসা – আজ আমি সকল মানুষের জন্য আপনাকে রাসুলরূপে প্রেরন করেছি, আল্লাহর সাক্ষীই যথেষ্ট। রাসুলের আনুগত্য করলে আল্লাহর আনুগত্য হয়। কেউ মুখ ফেরালে আপনাকে তাদের ওপর পর্যবেক্ষক করিনি।(৮০)সুরা আল ইমরান-অপনি বলে দিন,যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমার অনুকরন কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন আর পাপ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। বলূন তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য কর, যদি অবাধ্য হও, তবে জেনে রেখ আল্লাহ কাফেরদের ভালোবাসেন না। (৩১,৩২)

সুরা ফাতাহ – আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাত ও সতর্তকারীরূপে পাঠালাম। যেন আল্লাহ ও রাসুলে ঈমান আনো, তাকে সাহায্য ও সম্মান করো, সকাল সন্ধ্যায় তার তাসবিহ পাঠ করো। নিশ্চয়ই যারা আপনার কাছে বায়াত নেয় তারা আল্লাহর কাছেই আনুগত্যের শপথ গ্রহন করে, আল্লাহর হাত তাদের হাতের ওপর। যদি ভঙ্গ করে তবে পরিণাম তাদেরই ওপর। যে আল্লাহর সঙ্গেকার প্রতিশ্রুতি পূর্ন করে, তিনি তাকে পুরষ্কার দেন।

মোহাম্মদ (সা) এর বংশধরদের দৃষ্টিতে নামাজি –

নামাজে দরুদে ইব্রাহীম “হে আল্লাহ, তুমি মুহাম্মদ (সা) এবং মুহাম্মদ (সা) এর বংশধরদের প্রতি রহমত বর্ষন কর যেভাবে ইব্রাহীম ও তহার বংশধরদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেছ। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ (সা) ও তার বংশধরদের বরকত দান কর, যেভাবে ইব্রাহীম ও তার বংশধরদের বরকত দান করেছ্ নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত সম্মানিত।”
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজে, সুন্নত নামাজে, নফল নামাজে ও অন্য যে কোন নামাজে দরুদে ইব্রাহীমের মাধ্যমে মোহাম্মদ (সা) ও তার বংশধরের জন্য আল্লাহর কাচে রহমত ও বরকত চাওয়া হয়। এই চাওয়াটা অবশ্যই আন্তরিক হতে হবে নচেৎ নামাজ অমনোযোগিদের নামাজ হবে এবং লোক দেখানো নামাজ হবে।

(৪) অনন্তর ঐ নামাজ আদায় কারীদের জন্য ধ্বংস, (৫) যারা নিজেদের নামাজ সমন্ধে উদাসীন থাকে, (৬) যারা নামাজ লোক দেখানোর জন্য আদায় করে থাকে। (১০৭:৪,৫,৬)। নবীর বংশধর আওলাদে রাসুলগণ নামাজিদের প্রতি সবচেয়ে বেশি খুশি বা সন্তুষ্ট থাকার কথা। কিন্ত নবীর বংশধর আওলাদে রাসুলগণ নামাজিদের প্রতি প্রচন্ডভাবে অসন্তুষ্ট। প্রায় সব নামাজি নামাজে দরুদে ইব্রাহীমের প্রতি আনুগত্যশীল নয়।

যে সমস্ত নামাজির দরুদে ইব্রাহীমের প্রতি অনুগত্যশীলতা নাই তাদের মন মস্তিষ্ক অন্তরাত্মায়, জবানে ও প্রচারে নবীবংশধর আওলাদে রাসুলদের নাম থাকবে না এবং থাাকতে পারে না। মুল কথা হলে, নামাজের প্রতি ও দরুদে ইব্রাহীমের প্রতি নামাজি মনোযোগী হলে অবশ্যই নবীবংশধর আওলাদে রাসুলদের বুঝতে পারত, তারাই নবীবংশধর আওলাদে রাসুলদের সবচেয়ে বেশি ভালেবাসতো। নামাজিদের কে দরুদে ইব্রাহীমের প্রতি অপরিসীম আনুগত্যশীল থেকেই নবীবংশধর আওলাদে রাসুলদের প্রতি মহব্বতের ভালবাসার আনুগত্যশীল থাকতে হবে।

নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ও তার ফিরিশতাগণ নবীর ওপর রহমত পেশ করেন। হে মুমিনগন, তোমরা তার ওপর দরুদ ও উত্তম তরিকায় সালাম পেশ কর। (সুরা আহযাব ৫৬)

হাদীস- তোমরা জুমুয়ার দিন আামার ওপর অধিক দরুদ পাঠ করবে। কেননা তা ফিরিশতাগণ আমার নিকট পৌঁছিয়ে দেন।

আপন খবর