অনুকাব্য – প্রাণের ঈশ্বরত্ব বোধ

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

1.
এশকের অনল জ্বলিতেছে গো
ধুকে ধুকে নিরবধী বুকের ঘরে,
স্বরণে সেরূপ, নয়ন ঝড়িছে গো
অবিরাম, হৃদয়ে, গঙ্গা যমুনা তীরে।

2.
মোর বাতায়নে ভেসে আসা কিরণ প্রভাত,
হৃদয়ে ফোটায় শত ফুল পারিজাত।
যার সুঘ্রাণে মোহিত, পুলকিত দেহমন,
জাগে হৃদয় দেউলে প্রভুর, স্বরণ মনন,
সে সদাপ্রভু তরে মোর, এই প্রণিপাত-
নিরবধী তার তরে নিবেদন সতত।

3.
হৃদি বৃন্দাবনে বাঁশি, বাজে প্রতিক্ষণে
যমুনা পুলিনে, শ্রী রাধা নামে –
আকুলও পরান, সদা হয় উচাটন,
শ্যামের ও মিলন চেয়ে, মধুর ও প্রেমে।

4.
প্রাণের ঈশ্বরত্ব বোধ জাগাইতে চাও?
নিজেরে ত্যাজিয়া, মন সুভাবে মাতাও।
চির নিত্য পরমাত্মা প্রাপ্ত হতে হলে,
দয়াময়ের স্বভাব ধরো হৃদি অন্তঃস্থলে।
তোমার অহং ত্যাজিলে সে হইবে প্রকট,
তবেই হৃদয়ে জাগিবে সেই মহিমা বিরাট।

5.
প্রাণের নির্মাল্য অতি যতন করে
রেখেছি পরাবো বলে মোর প্রাণসখিরে!
অনঙ্গমঞ্জরে, সপ্তসুর ঝংকারে
আসিবে যবে সে মোর হৃদয়ও মন্দিরে,
শিখীচূড়া, পীতধরায়, প্রদীপ্ত ভাস্বরে –
তাহারে বসাবো আমার প্রাণের ও অন্দরে।

6.
এ গভীর বিজনও রাতে
মোর নিদ নাহি আঁখিপাতে!
নয়নে জ্বলিছে তার রূপের পিদিম,
স্বরণে সে রূপ, মরম কানন নাচিছে অবিরাম।
বিমোহিত প্রাণ, সে রূপ মোহিতে,
মোর প্রাণসখির রূপেরই বাণ বিধিছে প্রাণেতে।

7.
যে রহিবে নিরবে, চাহিয়া বিভবে
শ্রীগুরুর শ্রীচরণ, কমল ও পানে,
সে হৃদে পাইবে, নয়নে হেরিবে
শ্রীরূপ শ্রীধামে, সদা সর্বক্ষণে।
আঁখিতে বাধিও তারে যতনও করে
নিরালা ডাকিও তারে পরাণও ভরে।
তার বাসর সাজাইও তব, মনের ও বনে
তারে ভালোবাসিও, জীবনে মরনে।

8.
আমি মুহুর্তের মহাকালে, অনন্ত জগতের ভালে,
বয়ে চলেছি অখন্ড হতে, প্রতি রূপে অনিবার –
সমগ্র হতে বিকশিত করে আপনারে পূর্বাপর।

9.
অসীমতায় বাধা ছিল যে প্রাণ – সে সসীম এ ভুবনের পরে,
আপনত্বে, আজ মেলিয়া ধরেছে – চিরন্তন অসীমেরে।

10.
মোর মানস প্রিয়ারে হেরীগো মনে দু আঁখি রহি যবে মুদি,
অশ্রুসজলও মোর হিয়ার বাসরে, তারে জাগায়ে রাখি নিরবধী।

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

আপন খবর