অনুবাদ – ভালোবাসার চল্লিশ নিয়ম 15&16

পর্ব ১৫ এবং পর্ব ১৬ একত্রে
ভাবানুবাদ – লাবিব মাহফুজ

পর্ব – ১৫
ভালোবাসার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় প্রকৃত ধার্মিকের ধর্মজগত। প্রকৃত ধার্মিক যিনি, তিনি তাঁর সবটুকু দিয়ে ভালোবাসেন মানুষকে। তিনি মানুষের প্রেমিক। তিনি মানব মহত্ত্বের অনুসন্ধানী। মানুষে বিরাজিত পরমতত্ত্বের পূজারী তিনি। তিনি ভালোবাসার দ্বারা সেই অনন্ত মহিমা কে লাভ করতে চান।

আল্লাহকে তো সবাই ভালোবাসে। নিরাকার, নিষ্কলুষ এবং অদৃশ্য এক কল্পিত সত্ত্বাকে ভালোবাসা খুবই সহজও বটে! বরং কঠিন তো মানুষ হয়ে অপর মানুষকে ভালোবাসা। প্রকৃত ভালোবাসার রহস্য এখানেই লুক্বায়িত।
জগতে ভালোবাসা ব্যতিত কোনো প্রজ্ঞা নেই। মানুষ হয়ে মানুষকে ভালোবাসার চাইতে বড় কোনো ইবাদত নেই। মানুষের সেবা করার মধ্য দিয়েই হয়ে থাকে মহান প্রভুর সেবা। তিনি মানুষেই সমাসীন। মানুষের হৃদয়ই আমাদের ভালোবাসার তীর্থ। একজন মানুষই জানতে পারে অপর মানুষ কতটুকু ভালোবাসতে সক্ষম!

যদি আমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাই, তবে অনিবার্য ভাবেই আমাদেরকে তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষকে ভালোবাসতে হবে। যদি আমরা মানুষতত্ত্ব কে অবহেলা করে ¯্রষ্টার উপাসনা করি, তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আমরা স্রষ্টা চিনতে ব্যার্থ হয়েছি।
স্রষ্টা তো মানুষেই বিরাজিত।

পর্ব – ১৬
প্রকৃত বিশ্বাস হলো আমাদের ভিতরের বিশ্বাস। বাহিরের সংস্কার তো কেবল বাহিরেই থাকে। হৃদয়ের সংশয়বিহীন সুদৃঢ় ধারনা সমুহের সমন্বয়েই আমরা আমাদের বিশ্বাসের ভীতকে নির্মাণ করে থাকি। প্রভু প্রেমের পথে সবচাইতে মূল্যবান হলো আমাদের ভিতরের পরিশুদ্ধ বিশ্বাস।

আমাদের বাহিরকে আমরা বাহিরের উপাদান দিয়ে ধৌত করতে পারি। কিন্তু অভ্যন্তরকে ধৌত করতে হয় অভ্যন্তরীন উপাদান দিয়ে। আমাদের হৃদয়ে লেগে থাকা ঘৃনা, গোঁড়ামী আর অন্ধবিশ্বাস তথা কুসংস্কারের দাগ, যা বাহিরের পানি দিয়ে ধৌত করা যায় না। যে নোংরাগুলো আমাদের হৃদয়কে প্রতিনিয়ত দূষিত করে, তা ধৌত করার জন্য প্রয়োজন এক বিশেষ উপাদান।

উপবাস বা সংযম সাধনার মধ্য দিয়ে শরীরকে শুদ্ধ করা যেতে পারে। কিন্তু যখনই আপনি আপনার হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করতে চাইবেন, তা করতে হবে কেবল ভালোবাসা দিয়ে। ভালোবাসাই সেই নিরন্তর মহিমা, যা আপনাকে ভিতরে বাহিরে পরিশুদ্ধ করবে।
একমাত্র ভালোবাসাই হৃদয়কে শুদ্ধ করতে পারে।

আপন খবর