লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী
চৈত্র-খররোদ্রের দাবদাহে যখন হাহাকার করছে ধরণী, হঠাৎ কালবৈশাখীর তুমুল তান্ডবে যখন হু হু স্বরে কেঁদে কেঁদে উঠছে ফাগুনের বনকুঞ্জ, ঝড়া পল্লবের দীর্ঘশ্বাসগুলো জমাট বেঁধে বেঁধে ভারী করে তুলেছে পৃথিবির বুক – এমনি এক ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ উন্মত্ত ভয়াল রাত্রির অমানিশা ভেদ করে কে যেনো ঐ দূরে স্নিগ্ধ-মধূর, নৃত্য-চপল সুর লহরীতে বাজিয়ে চলেছে অনন্ত সুন্দরের গান, অসীমের প্রাণোচ্ছল-পূর্ণা সুর ঝংকার। সে সুরে ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে সকল আধার, ঝড়-সমাকীর্ণ বসুধা নব প্রাণ প্রাচুর্যে হেসে উঠছে, দুলে উঠছে! ঝড়া পাতাদের মিছিল ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে নব কিশলয়ের মোহনীয় রূপ-লাবণ্য! অগ্নিক্ষরা কন্ঠে গীত হচ্ছে মিলনোৎসবের জয়-সংগীত!
মহাকালের প্রভু তুমি। অনন্ত অখন্ড শাশ্বত প্রেমের অমর লোক থেকে প্রাণ বিলানোর জন্য কৃপাপরবশ হয়ে আবির্ভূত হলে এই হলুদ পাতাদের জঞ্জালে! নব পল্লবের আগমনী সংগীত কন্ঠে নিয়ে আবির্ভূত হলে আত্মা হারানোদের দেশে! মাঝি হয়ে, স্বয়ং তরী হয়ে এলে বিপদসঙ্কুল অকুল দরিয়ার পাড়ে, কূলহীনদের কোলে তুলে পার করে নেয়ার জন্য!
চিরকালের মাওলা তুমি! জগতের সকল সৌন্দর্যের উৎস তুমি, সত্যের ধারক তুমি, প্রেমিক নও, স্বয়ং প্রেম তুমি! তোমার মহিমা যে ধারণার বহু উর্ধ্বে, অনন্ত জগত পরিব্যপ্ত!
প্রভু! মাওলা! চারদিকে যে মোহনীয় মরিচিকা! দিকভ্রান্ত আমি! মন তো পরাভূত! তোমার কৃপা বিনা মুক্তির কোনো আশা নাই। তোমার আগমনী সত্য হয়ে উঠুক আমার সর্ব অস্তিত্বে। পরম প্রেমময় মোহন রূপের চ্ছটায় আলোকিত-উচ্চকিত হয়ে উঠুক আমার তনু-মন-প্রাণ।
প্রভু! আধার সমাচ্ছন্ন আকাশ আমার! আগমনী তব চরণ-বিধৌত আব-হায়াতের অমৃত সিঞ্চনে আমার হৃদাকাশকে স্নাত করো। আমার চেতনার বাতায়নে হানো তোমার ত্রিশুল-দন্ড আঘাত! প্রেম রত্নের চিন্ময় মূর্তির আবির্ভাব হউক আমার সর্ব অস্তিত্বে।
প্রভু! আমার অস্তিত্বে তোমার আবির্ভাব সত্য হউক!
প্রভু! আমার অস্তিত্বে তোমার আবির্ভাব শাশ্বত হউক!!
প্রভু! আমার অস্তিত্ব তোমার আবির্ভাবে ধন্য হউক!!!
রচনাকাল – 22/04/2020
লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী