হযরত খাজা কাজী বেনজীর হক চিশতী নিজামী
“মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব” এ কথাটির মধ্যে কোনো জাত-ভেদ নেই, সমস্ত মানুষই এ কথার লক্ষ্য। এখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি প্রভেদ করা মূর্খতার পরিচয়। কোরানুল করিমেও সমস্ত মানুষকে এক এবং এক নফস হতেই (নফসে ওয়াহাদাতান) সৃষ্টি বলে ঘোষণা করছে। কেবল স্বভাবের কর্মানুসারে মানুষের শ্রেণিভাগ নির্ণয় হয় এবং সে মতে ধর্ম ও অধর্মের পার্থক্য সূচিত হয়। আমাদের এ পৃথিবী নামক গ্রহটিতে বহু ধর্ম ও মতবাদ প্রচলিত আছে। তার মধ্যে ইসলাম, খ্রিষ্টান, ইহুদী-নাছারা, হিন্দু, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মের অনুসারীগণ সংখ্যাধিক্য বলে সাব্যস্ত আছে। যতো ধর্মই আছে, সংখ্যায় কম বা বেশী, কোনো ধর্মের মহাপুরুষগণ এবং তাদের আনিত কিতাবাদিতে অন্যায়, অত্যাচার, জোর-জুলুম, মিথ্যা, প্রবঞ্চনা ইত্যাদি স্বীকার করেনি বা সমর্থন দেয়নি। প্রতিটি ধর্মে মানুষ ও অন্যান্য জীবের প্রতি মঙ্গল করা ও মঙ্গল কামনা করার কথাই বিধৃত আছে, অন্যথায় তা ধর্ম ও ধর্মশাস্ত্র হতে পারে না। অন্যায়, অত্যাচার, জোর- জুলুম, উশৃঙ্খল কর্মকান্ডকে প্রতিহত করে ধর্মভাব এবং ¯্রষ্টার ধর্মরাজ্য বিস্তারের কথা আছে। ধর্মরাজ্য বলতে জোর করে অন্য দেশ দখল করে তাতে স্বীয় ধর্মের আইন প্রয়োগ করা নয়। তাতে দেশ দখল করা যায় সহজে কিন্তু ধর্ম প্রচার সহজে হয় না। কঠিন হলেও কথাটি সত্য যে, হযরত ওমরের রাজ্য বিজয় এবং পরবর্তীতে তা আবার হাত ছাড়া হওয়ার ইতিহাসটি দেখে নিলেই হবে।
মূলতঃ ধর্ম ত্যাগ কথাটিই অবান্তর। কারণ, মানব-ধর্ম একটিই, তার দুই হয় না।
মানবাত্মার মানব ধর্মে যারা আছে তারাই হলো হিজবুল্লাহ, মুমিন, তাদের মধ্যে ঐক্যতা, প্রেম-মহব্বত সৃষ্টি হয়, যা নামাজ, রোজা এবং সদকার চেয়েও উত্তম বলে রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলায়হি ওয়াছাল্লাম জানিয়ে দিয়েছেন। আর হায়ানী আত্মার বা জীবাত্মার জীব প্রাণী মানুষের ধর্ম বহু। এরা বহু-ই থেকে যায় আর বহু মতবাদে আক্রান্ত হয়ে এরা হিজবুশ্ শায়াতিনের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়, তারা যতো রকমের উপাসনা বা নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদিই করুক না কেনো। নামাজ, রোজা (আনুষ্ঠানিক) করা এক জিনিস আর মানুষ হওয়া আরেক জিনিস।
‘নামাজের মূল মাহাত্ম্য মনের আমিত্বটিকে দূর করে দেয়া।’
কোরানের নির্দেশিত এ নামাজ কেউ স্বীয় জীবনে কায়েম করে না, কেউ করলে তথাকথিত ধর্মান্ধ নামাজিরা তাদেরকে বেনামাজি হিসেবেই দেখে।’
আসলে তথাকথিত নামাজিরাই যে বে-নামাজি, এ কথা তথাকথিত মুসলিম সমাজ মোটেও বুঝে না, বুঝতেও চায় না এবং বুঝতে দেয়ও না। যারা মানবাত্মার মানব-ধর্ম (যা সব মানুষের একমাত্র মুক্তির বিধান) তা আদায় করে, তারা অবশ্যই কোরানিক ছালাত আদায় করছে। ধর্মের নামে সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা, প্রতারণা করা হায়ানী আত্মার বা পশু আত্মার কাজ। এ ধরনের লোকগুলো সুরতে মানুষ আর স্বভাবে হয় জানোয়ার। ‘যার নিজের বুকে মানবাত্মার রঙের আলপনা ফুটেনি, সে চিত্রে রঙ ফুটাবে কেমন করে?’ এমনি ভাবে অন্যান্য ধর্ম এবং সে ধর্মের অন্ধ-মৌলবাদী ধার্মিকদের বেলায়ও তাই হয়েছে। আসলে এ ধরনের মানসিকতার লোকজন হলো মানসিক বিকারগ্রস্ত। কারণ, এরা হায়ানী আত্মার গুণ-খাছিয়তে আবৃত হয়ে আছে। এরা ধর্ম কি জিনিস তা বুঝেনি এবং তারা ধার্মিকও নয়। যদিও বাহ্যিকভাবে এরা অনেক উপাসনা করে থাকে এবং বেশ-ভূষণেও ধার্মিক সেজেছে। আসলে এরা আলমে নাছুতের জীবমানুষ। এরা দীলে পশুত্বের-রাজ্য কায়েম করে রেখেছে বিধায় তারা ধর্মের নামে অন্যায়-অত্যাচার, জোর-জুলুম, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলে, মানুষ হত্যা করে চলে। ধর্মরাজ্য বিস্তার মানে মানুষকে দয়া, মায়া, প্রেম, ভালোবাসা দান করা তথা সৎস্বভাব যোগে চৈতন্য ভাব জাগ্রত করা তথা মানবতা বা ইনছানিয়াত প্রতিষ্ঠা করা এবং ¯্রষ্টা বা খোদাকে চেনা। তাহলে যে সমস্ত মুসলমান বা হিন্দু বা ইহুদী-নাছারা বা খ্রিষ্টান, বৌদ্ধগণ একে অন্যকে ব্যক্তি স্বার্থের জন্য বা দলীয় স্বার্থের বা ধর্মের দোহাই দিয়ে জোর, জুলুম নির্যাতন করছে, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করছে, পুড়িয়ে মারছে, একে অন্যের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, খানকাহ ইত্যাদি ভেঙ্গে ফেলছে তারা কোন ধর্মের বাণী অনুসারে এ কাজ করছে? কোনো ধর্মেই এ সমস্ত পশুত্বের আচরণ সমর্থন করেনি। যদিও তথাকথিত হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, ইহুদী, নাছারাগণ ধর্মানুসারী বলে খ্যাত। ইহা তাদের ছদ্মাবরণ, আসলে এদের কোনো ধর্ম নেই। তারা ধর্মের বোরখা পড়ে সমাজে বিরাজ করে এবং ধর্ম বলতে কিছুই বুঝেনি। এরা ধর্মশাস্ত্রকে আক্ষরিক অর্থে বিশ্লেষণ করে (যা কোরানে নিষেধ করা হয়েছে- সুরা বনী ইসরাঈল দ্রঃ) কূপমন্ডুকতার পরিচয় দিচ্ছে, বিশ্বজনীন মানবধর্ম ইসলামকে চারি দেয়ালে আবদ্ধ করে রেখেছে এবং মানুষকে পথভ্রষ্ট করে চলেছে। তারা হায়ানী আত্মার অধিকারী দু’পাওয়ালা ভয়ংকর নরপশু। ধর্ম বলতে তাদের বুঝ হলো শুধু বাহ্যিক কিছুু আনুষ্ঠানিক ক্রিয়া কর্ম তথা কপালে তিলক ফোঁটা ধারণ, টিকলি, গলে পৈতা, মৃন্ময় মূর্তির পূজা, কিছু মন্ত্র জপ করা, দাঁড়ি, টুপী, লম্বা জুব্বা, শুধু আনুষ্ঠানিক নামাজ, রোজা, তাসবিহ জপ, সপ্তাহে একবার গির্জায় বা উপাসনালয়ে গিয়ে হাজিরা দেয়া, জোর করে বা অর্থের লোভ দেখিয়ে বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত করা ইত্যাদি। সাথে যার যার ধর্মের সাইনবোর্ড উঁচু করে তুলে ধরে প্রত্যেকেই একে অন্যের ধর্মকে, ধার্মিককে নিন্দা করছে, আক্রমণ করছে, বাড়িঘর ভেঙ্গে দিচ্ছে, পুড়িয়ে দিচ্ছে, ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে, বোমাবাজি বা গ্রেনেড হামলা করছে, কাফের-ফাসেক বা বিধর্মী বলে গালাগালি করছে- এই হলো তথাকথিত বকধার্মীকদের ধর্মের এবং ধার্মিকতার স্বরূপ। এরা হায়ানী আত্মার অধিকারী নিছক জীব মানুষ মানে বাহিরে মানুষ ভিতরে পশুত্বের সিরাত। ধর্মের ছদ্মাবরণে বাস করতে এরাই পছন্দ করে বেশী। কারন, ভিতরের দৈন্যতা ঢেকে রাখার জন্যই সাজের এতো ঘটা তাদের।
এরা ধর্মশাস্ত্রকে আক্ষরিক অর্থে বিশ্লেষণ করে শত মতভেদ সৃষ্টি করছে এবং সে মতভেদের বেড়াজালে নিজেরা তো আবদ্ধ হচ্ছেই এবং সাধারণ মানুষগুলোকেও মতভেদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করে পথভ্রষ্ট করছে। তাতে যখন তথাকথিত ধার্মিকদের ভিতরে লালিত-পালিত পশুত্বটি জাগ্রত হয়ে উঠে তখন অন্য জাতিকে ধর্মের দোহাই দিয়ে নির্লজ্জভাবে আক্রমন করা বা হত্যা করা, মেয়েদেরকে ধর্ষণ করা তাদের নিকট জায়েজ হয়ে যায়। ধর্মের দোহাই দিয়ে আমাদের দেশে এমনি একটি জঘন্য কাজ করেছে জামায়াতি নেতা মৌলবী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং অন্যান্য মৌলবী সাহেবগণও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। বহু মেয়েকে ধর্ষণের জন্য মৌলবী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাপ্লাই দিয়েছিলো পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন আজিজের কাছে। এভাবে এদেশের মেয়েদেরকে পাকিস্তানীদের দ্বারা ধর্ষণ করিয়ে, নির্যাতন করিয়ে এবং নিজেরাও নির্যাতন করে সাঈদী গং-রা অনেক ছোয়াব(!) অর্জন করেছিলো! অন্যান্য সমমনা মৌলবাদীগণও তাই করেছিলো। এরা এদেশের মেয়েদেরকে গণিমতের মাল হিসেবে গণ্য করে ধর্ষণ করেছিলো। যে সাঈদীর ধর্মই হলো অলি-আউলিয়াদের বিরোধীতা করা, দ্বীন-এ-মুহাম্মদী বা দ্বীন-ই-মিল্লাতের বিরোধীতা করা, ইয়াজিদের ধর্মকে বাস্তবায়ন করা, সে কি করে একজন ভালো মুসলমান হতে পারে? অন্ধ-বধির মূর্খরা এ সাঈদীর ধর্মকথার, ওয়াজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে আছে। সামান্যতম হুঁশ-আক্কেল থাকলে এ ধরনের গর্ধপনার পরিচয় দিতো না।
‘জ্ঞানীর কাছে জেনে নিলে একটি বিষয় পরিষ্কার হবে যে, নবুয়তে যাদেরকে নবী-রাছুল বলা হয়, বেলায়েতে তাদেরকে অলি-আউলিয়া বলা হয়। ’
নবী-রাছুলদের বিরোধীতা করতো কাফের-মুনাফেকরা, আর এখন অলি-আউলিয়া বা পীর-মুর্শিদের বিরোধীতা করে জঙ্গি মৌলবাদী মোল্লা-মৌলবীরা। সিরাতে আবু জাহেল, আবু লাহাব, মুয়াবিয়া, ইয়াজিদের ছড়াছড়ি, বিশেষ করে মাদ্রাসাগুলোতে ইয়াজিদের অনুসারী চৌদ্দআনা। নবী রাছুলদের বিরোধীতা যেমন কুফরী অলি আউলিয়াদের বিরোধীতা করাও তেমনি কুফরী। আবু জাহেল, আবু লাহাব যেমন রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলায়হি ওয়াছাল্লামের বিরোধীতা করেছে নিজেদেরকে সত্যপথের পথিক জেনে, তেমনি অন্ধ-বধির মোল্লারাও অলি-আউলিয়া বা পীর-মুর্শিদের বিরোধীতা করছে নিজেদেরকে সঠিক মনে করে। আসলে এরা যে কতো ধর্মান্ধ, অজ্ঞ-মূর্খ তা যদি কিঞ্চিৎ জানতো, লজ্জায় গর্তে প্রবেশ করতো। জ্ঞানীদের বিরোধীতা করাই তাদের ধর্ম। কাজেই অলি-আউলিয়াদের বিরোধীতা করে সাঈদী গং-রা কুফরী করছে, আর কুফরী-তে কায়েম যারা তারা কাফের হয়ে যায়। এখনো তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে কোরানের বয়ান শোনায় তাদের স্বজাতি ভাইদেরকে এবং দাঁড়ী-টুপি, পাগড়ী পড়ে ধর্মের ওয়াজ নামক আওয়াজ তুলে নিজেদেরকে পুত-পবিত্র বলে নাকিকান্নার সুর বাজিয়ে বেড়াচ্ছে। সাধারণ মানুষ এদেরকে ধার্মিক বলেই মনে করে। করবে না কেনো? যে বেশ ধরেছে, কার বুকের এমন পাটা আছে যে, তাদেরকে ধার্মিক বলবে না? আর তারাও জানে যে, সাধারন মানুষ কাজের চেয়ে সাজের মর্যাদাই বেশী দেয়। তাই ধর্ম এবং ধার্মিকের বেশ ধারণ করা হলো তাদের কুকীর্তি ঢাকার সুন্দর একটি হাতিয়ার।
একটি দাঁড়ীর মধ্যে সত্তরজন ফেরেশতা থাকে- এটা মোল্লাদেরই বয়ান। কিন্তু চুল, পশম বা মোচের মধ্যে কোনো ফেরেশতা থাকে না তার কারনটি বুঝা গেলো না ! তবে আবু জাহেল এবং আবু লাহাবেরও লম্বা দাঁড়ী ছিলো এবং অন্যান্য ধর্মের বহু লোকদের মুখেও দাঁড়ী আছে, সেই দাঁড়িতেও ফেরেশতা আছে কিনা বয়ানে তার কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। ফরিদপুরের বাচ্চু রাজাকার (মাওলানা আবুল কালাম আজাদ) টিভি চ্যানেলে কোরানের অনেক বয়ান মানুষকে শুনিয়েছে। ১৯৭১ সালে সে যে সমস্ত কুকীর্তি করেছে তার জন্য বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বিধায় সে গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কারন, তার অপরাধের শাস্তি কি হবে নিশ্চয়ই সে বুঝতে পেরেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে তাঁর ফাঁসির রায় হয়েছে। গোলাম আযমের গোলমালে পড়ে জামায়াতের হাতে বস্ত্রহরণ হয়েছিলো সাঈদী সাহেবের (মাসিক মানবতা- ২৯ পৃষ্ঠা)। তথাকথিত জামায়েতে মওদুদীর গঠিত আল বদর, আল শামস্ ইত্যাদি নতুন সাইনবোর্ডওয়ালাদের নির্লজ্জ, জঘণ্য ঘটনাবলীর ইতিহাস দেখলে গা শিহরিয়া উঠে, যা এক কলঙ্কজনক ইতিহাস।
শয়তান যে ধর্মের ছদ্মাবরণেই জঘন্য কাজ করে ফিরে অধ্যাপক গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, মাওলানা ইউসুফ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গং-দের ইতিহাসটি দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। বাংলার স্বাধীনতার বিরোধীতা করে এরা ইয়াহিয়া খান এবং টিক্কা খানের সাথে গোপনে বৈঠকে মিলিত হয়ে এ দেশে গণহত্যা, নারী ধর্ষণের মতো ছোয়াবের(!) কাজগুলো করেছিলো। এখন সে ইতিহাস বিকৃত করে নব্য মুনাফেক জামায়াতে মওদুদীদের কাছে নির্দোষীর করুণ বয়ান শুনানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধে সাঈদীরও ফাঁসির রায় হয়েছে (পরবর্তীতে আপিলের রায়ে আমৃত্যু সাজা দেয়া হয়েছে)। এ ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াতিরা হত্যা, লুটপাট, হিন্দুদের প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে দিয়েছে এবং তাদের অনেক মন্দির ভেঙ্গে ফেলেছে (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৫ই মার্চ/২০১৩) এবং তাতে অনেক ছোয়াবও কামিয়েছে! তাতেও কুল না পেয়ে শেষে তাকে বাঁচানোর কৌশল হিসেবে জামায়াতি এবং অন্যান্য ধর্মান্ধরা সাঈদীকে চাঁদে দেখেছে বলে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করার এক জঘন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে এবং ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড-কে আরো উস্কানী দিচ্ছে এবং সাধারণ মানুষকে বুঝাতেও পেরেছে যে সাঈদী অনেক ধার্মিক এবং ভালো মৌলবী। যদিও এ ধরনের ধর্মের নামে প্রতারণা করা তাদের নতুন কিছু নয়।
আবার জামায়াতের ভাড়াটিয়া সংগঠন হিসেবে ডিগবাজি দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে “হেফাজতে ইসলাম” নামে আরো একটি ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন, যা তাদেরই অর্থে পরিচালিত হচ্ছে। নতুন নামে এ দলটির পিছনে ১০ কোটি বা আরো বেশী টাকা খরচ করেছে জামায়াতে মওদুদীরা (যুগান্তর- ১৯ মার্চ/২০১৩)। পত্রিকা হতে জানা যায় তাদের সমাবেশ করতে ৮৫ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে। পরে আবার হাতে তসবিহ, জায়নামাজ নিয়ে (মোল্লা শফির নির্দেশে) ৫ই মে/২০১৩ এ হেফাজতিরা এবং অন্যান্য মৌলবাদীরা যে ভয়ংকর তান্ডব চালিয়েছিলো তা আফ্রিকার বন্যপশুকেও হার মানিয়েছিলো। কি সুন্দর প্রতারণা- হাতে তসবিহ আর জায়নামাজ। আর তাদের চেহারার মাঝেও ফুটে উঠেছিলো আদিম হিংস্রতার চিহ্ন। কওমী মাদ্রাসার লোকগুলো আসলেই আদিম জাতি, আধারের জীব, অথচ বাস করছে আধুনিক যুগে। ইয়াজিদ মোল্লা যেমন তথাকথিত মুসলমানদেরকে বুঝাতে পেরেছিলো যে, ইয়াজিদ সত্য পথে আছে এবং সে সাচ্চা মুসলমান, অনেক নামাজ রোজা করে, ইমামতি করে, হযরত ইমাম হুসাইন আলায়হিস সালামই ভুল পথে আছে এবং তাকে হত্যা করা জায়েজ। এ ফতোয়াই ইয়াজিদের আলেম-মোল্লারা দিয়েছিলো- যে ফতোয়া শীমার তার পাগড়ীর নিচে নিয়েই ইমাম হুসাইনকে হত্যা করেছিলো।