ব্লগ – কয়েকটি আধ্যাত্মিক উপদেশমালা – বাণী

সংকলক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

ইমাম জাফর আস সাদিক (র) এর কিছু আধ্যাত্মিক উপদেশ বাণী-

1. বংশ দিয়ে কিছু হয় না। আপনার কর্ম সাধনাই আপনাকে চিরমুক্তির দরজায় পৌঁছে দিবে।

2. আমার যা কিছু নিজস্ব গৌরব বা গর্ব, সব আমি মুছে ফেলেছি। তবে কিছু কিছু আল্লাহ প্রদত্ত গৌরব থাকে যা আপনা হতেই প্রতিভাত হয়। তাকে অহঙ্কার বা অহমিকা বলা চলে না।

3. যে লোক আরাম ও নিরাপত্তা কামনায় উপসনা করে, আর উপাসনার পর আত্মশ্লাঘা প্রকাশ করে, সে আল্লাহ থেকে দূরে সরে যায়।

4. ধৈর্যশীল দরবেশের মহিমা বেশি, তিনি অহোরাত্র আল্লাহর উপসনায় মগ্ন থাকেন। আর বিত্তশালীরা ধনসম্পদের ভাবনায় অস্থির থাকে।

5. সেই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, যে অন্যায় করার আগেই পাপের কথা ভেবে তওবা করে।

6. পাঁচ শ্রেণীর লোকের সাথে সম্পর্ক রাখবে না। ১.মিথ্যাবাদী (তার কথা বিশ্বাস করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে)। ২.কৃপণ (সে অর্থ সঞ্চয়ের জন্য অন্যের ক্ষতি করবে)। ৩.দয়াহীন ব্যক্তি (বিপদের সময় সে দয়া করবে না)। ৪.কাপুরুষ (প্রয়োজনে সে কোনো কাজেই আসবে না)। ৫.ফাসেক (এদের লোভ লালসা অন্তহীন)।

7. নফসের হাতের পুতুল হয়ো না। তাহলে জাহান্নামে হবে তোমার অনন্ত আবাস।

হযরত খাজা ওয়ায়েস করনী এর কয়েকটি মূল্যবান উপদেশ –

1. আপনি কি আল্লাহকে চিনেছেন? যদি চিনে থাকেন তাহলে অন্য কাউকে যেনো না চিনেন, না জানেন। এটাই হবে আপনার জন্য মঙ্গলজনক। আল্লাহ কি আপনাকে চিনেন? যদি চিনে থাকেন তিনি ছাড়া অন্য কেউ যেনো আপনাকে না চিনেন, না জানেন। এটাই হবে আপনার জন্য মঙ্গলজনক।

2. যিনি আল্লাহকে চিনেছেন, তিনি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ভালোবাসাতে শান্তি পেয়েছেন বলে আমার জানা নেই।

3. যখন ঘুমিয়ে যাবেন তখন মনে করবেন মৃত্যু আপনার শিয়রে। যখন জেগে থাকবেন তখন জানবেন মৃত্যু আপনার চোখের সামনে।

4. আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি যদি তোমার দৃঢ় বিশ্বাস না থাকে, তাহলে আসমান জমিন তূল্য ইবাদত তোমার কোনো কাজেই আসবে না।

5. তোমার যা কিছু আছে, তাতেই তুষ্ট ও তৃপ্ত থাকবে।

6. তিনটি জিনিস যে খুব ভালোবাসে, জাহান্নাম তার খুব নিকটবর্তী। ১.সুখাদ্য ২.উত্তম পোষাক ৩.আমীর উমরাহ ধনীদের সহচর্য।

7. যে লোক আল্লাহকে চিনেছে, তাঁর কাছে কোনো কিছু গোপন নেই। আর তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহকে জানা সম্ভব।

8. শান্তি রয়েছে নির্জনতার মধ্যেই।

9. একত্ববাদের জ্ঞান কেবল তখনই লাভ করা যায়, যখন আল্লাহ ব্যতীত অন্য সব চিন্তা মন থেকে সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়ে যায়। আল্লাহর দরবারে মনকে হাজির রাখা চাই। তাইলেই শয়তান আর সেই মনের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।

10. উচ্চ মর্যাদার অন্বেষণ করেছি, আর তা পেয়েছি বিনয়ের মধ্যে। গৌরব অর্জনের বাসনা ছিল, তা অর্জন করেছি দারিদ্রের মধ্যে। নেতৃত্ব লাভের আশা করেছি, আর তার লাভ করেছি সত্যের ভিতরে। আভিজাত্যের ইচ্ছা ছিল, আল্লাহভীতির মধ্য দিয়ে তা লাভ করেছি। মহত্বের সন্ধান করেছি, আর তা পেয়েছি তুষ্টির মাধ্যমে। নির্ভরতার সন্ধান করেছি, আর তা আর ওপর নির্ভরশীলতার মধ্য দিয়ে পেয়ে গেছি।

11. মানুষ যে পর্যন্ত দুনিয়াকে বাদ না দেবে, সে পর্যন্ত সে আল্লাহ প্রেমিক হতে পারবে না।

মহান ওলীদের বাণী মুবারক মানুষেদের কে সরল সঠিক পথের দেশনা দান করে। আল্লাহপ্রেমিক গন আল্লাহর নূর তাজাল্লীয়াতের জগতে অবস্থান করে খোদার মহাপ্রেম দরিয়ায় স্নান করে সেখান থেকে প্রভূপ্রেম সংক্রান্ত অত্যন্ত মূল্যবান মূল্যবান উপদেশাবলী সাধারন মানুষদের জন্য বিতরণ করে থাকেন। এই উপদেশগুলোর মধ্যে থাকে প্রভূ প্রেমের সন্ধান। মানুষ যদি মহান পূণ্যাত্মাদের এ বাণী সকল জীবনে প্রয়োগ করে তাহলে তারা খুব সহজেই পোঁছে যেতে পারবে মহান জাতপাকের অমর প্রেমের ঐশী লোকে। তখনই সফল হবে তাদের মানব জনম। জীবনের সকল ক্ষেত্রের সঠিক পথ নির্দেশনা রয়েছে আউলিয়া কেরামগণের এ সমস্ত উক্তি বা বচন সমূহের মধ্যে। এই শিক্ষা গুলো আমরা যেনো আমাদের জীবনে প্রয়োগ করে প্রকৃত ধার্মিক হয়ে উঠতে পারি – এ প্রার্থনাই রইলো মহান প্রভূর দরবারে।

সংকলক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

আপন খবর