ইয়া মাওলা আলী (আ.)
বিদায় হজ্ব সম্পন্ন করে রসুলে কারীম (সা.) প্রায় সোয়া লক্ষ সাহাবী সমভিব্যাহারে এহরামের পোষাক পরিহিত অবস্থায়ই মদিনার দিকে রওনা হলেন। দিনটি ছিল ১৮ জিলহজ্ব। পথে গাদীরে খুম নামক স্থানে উপস্থিত হলে রাসুল করীম (সা.) এর ওপর নাযিল হয় –
হে রাসুল, আপনার রবের পক্ষ হতে আপনার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দিন। আর যদি তা পৌঁছে না দেন, তাহলে রেসালাত পৌঁছানো হল না। (৫:৬৭)
আয়াত নাযিল হওয়ামাত্র রাসুলে পাক (সা.) সকলকে ঐ স্থানেই (গাদীরে খুম) একত্র করে রবের নির্দেশিত রেসালাত পৌঁছে দেবার জন্য মঞ্চ সাজাইলেন। উটের পিঠে বসার অনেকগুলো আসন একত্র করে স্থানটি উঁচু করে তার উপরে উঠে রসুলে পাক (সা.) ঘোষণা দিলেন-
আমি কি তোমাদের জীবন হতে অধিক প্রিয় এবং অধিকার প্রাপ্ত নই?
উপস্থিত সকল সাহাবী সমবেত কন্ঠে বলে উঠলেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ।
উপস্থিত জনতামন্ডলী হতে এই স্বীকৃতি লাভ করে রাসুলে পাক (সা.) মাওলা আলী (আ.) কে সেই মঞ্চে দু-বাহু ধরে উঁচু করে তুলে ধরলেন এবং উচ্চারণ করলেন মাওলাইয়াতের সেই অমোঘ ঘোষণা :
মান কুনতুম মাওলাহু, ফাহাজা আলীউন মাওলা।
আমি যার মাওলা, আলী তার মাওলা। হে আল্লাহ, তুমি তাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো যে আলীকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তুমি তাকে শত্রুরূপে গ্রহণ করো যে আলীর সাথে শত্রুতা করে, সাহায্য করো তাকে যে আলীকে সাহায্য করে এবং লাঞ্ছনা দাও তাকে যে লাঞ্ছনা দেয় আলীকে।
মাওলাইয়াতের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত জনতামন্ডলীর মধ্যে ধন্য ধন্য রব উঠে গেল। সকল সাহাবী ক্রমে নবনিযুক্ত মাওলা ও ইমাম আমীরুল মুমিনিন মাওলা আলী (আ.) এর পবিত্র হাত মোবারকে হাত রেখে বাইয়াত তথা আনুগত্য গ্রহণ করলেন। বাইয়াত গ্রহণ শেষ হলেই রাসুলে পাক (সা.) এর নিকট নাযিল হল কুরআনের সর্বশেষ আয়াতটি।
আজ তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের ওপর আমার নেয়ামতের পরিপূর্ণতা দান করলাম এবং তোমাদের দ্বীন ইসলামের প্রতি আমি রাজি হইলাম। (৫:৩)
দ্বীন পূর্নতার ঘোষণাপ্রাপ্তির আনন্দে রাসুলে পাক (সা.) রবের দরবারে কৃতজ্ঞতা জানালেন এই বলে –
আল্লাহ মহান। সমস্ত প্রশংসা তাঁর দ্বীনকে পূর্ণ করার জন্য ও নেয়ামতকে পরিপূর্ণ করে দেয়ার জন্য, আমার রেসালাতের ওপর সন্তুষ্টির জন্য এবং আবু তালিব নন্দন আলীর বেলায়েতের জন্য।
রাসুলে খোদা (সা.) বলেন – আমি যার মাওলা আলী তার মাওলা।
(তাফসীরে কবীর, তাফসীরে দুররে মনসুর, তাফসীরে রুহুল মাআনী, তাফসীরে মাজহারী, তাফসীরে সালাবী, তিরমিজি, ফতহুল কাদীর, আস সুনান, আল মুসান্নাফ, আল মুসনাদ, তারিখুল কবীর)
উমর ইবনুল খাত্তাব হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলীর ন্যায় এত বেশি মর্যাদা কেউ অর্জন করতে পারেনি। আলীর পদাঙ্ক অনুসরণকারীরা হেদায়েতপ্রাপ্ত। (আর রিয়াজুন নাদেরা, আল মুস্তাদরাক, সাওয়ায়েকে মুহরিক, নুরুল আবসার, তারিখে বাগদাদ, সীরাতে হালাবী)
রসুলে খোদা (সা.) বলেন, আমি ও আলী একই নূরের দু টুকরো। আমি ও আলী একই নূর হতে সৃষ্টি।
(ফাজায়েলে সাহাবা, বিয়াজুন নাদেরা, ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাহ, সুয়ুফুল মুশরিকাত, তাফসীরে রুহুল মাআনী, তারিখে বাগদাদ)
নবী ও আলী একই বংশ।
(সাওয়ায়েকে মুহরিকা, মাজমাউল যাওয়ায়েদ, জামেউল কবীর, আল মুস্তাদারাক, মুসনাদে ফিরদাউস, কানজুল উম্মাল, তারিখে দামেস্ক, নাইলুল আওতার)
রসুলে খোদা (সা.) বলেন, আমি হিকমতের শহর, আলী তার দরোজা।
(আল মুজামুল কবীর, আল মুস্তাদরাক, জামেউস সগীর, কানজুল উম্মাল, জামেউল কবীর, ফাজায়েলে সাহাবা, আল জামে, হিলিয়াতুল আউলিয়া, আল মানাকিব, ফতহুল কবীর, সাওয়ায়েকে মুহরিকা, শাওয়াহেদুত তানজিল)
রসুলে খোদা (সা.) এর একমাত্র উত্তরাধিকারী হলেন মাওলা আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)
(কানজুল উম্মাল, তারিখে তাবারী, তারিখে দামেস্ক, মুসনাদে ফিরদাউস, ফতহুল বারী, রিয়াজুন নাদেরা, আল মুস্তাদরাক)
মাওলা আলী (আ.) এর প্রতি ভালোবাসার দ্বারাই মুনাফেক ও মুমিনের পার্থক্য নিরূপিত হয়।
(আস সুনান, আল মুসনাদ, ফাজায়েলে সাহাবা, সুনানে কুবরা, আল মুজাম, শরহে মাজাহিব, আল ঈমান, শরহে সুন্নাহ, আল মুসান্নাফ, আল ইতেকাদ, মানাকিবে আলী)
কোরআন ও আলী পরস্পর অবিচ্ছিন্ন।
(আল মুজামুল আওসাত, আল মুজামুস সাগীর, আল মুস্তাদরাক, কানজুল উম্মাল, তারিখুল খুলাফা, ফতহুল কবীর, ফয়জুল কাদীর)
মাওলা আলী (আ.) স্বয়ং জান্নাত ও জাহান্নামের বন্টনকারী।
(আরশিফু মুলতাকা আহলিল হাদিস, ফারায়েদুস সিমতাঈন, মানাকিবে আলী, ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাহ, মুসনাদে ফিরদাউস, জামেউল কবীর, কানজুল উম্মাল)
গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.) বলেন, সমুদ্রকে যেমন ঘটিতে ধারণ করা সম্ভব নয়, তেমনি বর্ণনার মাধ্যমে মাওলা আলী (আ.) এর গুণাবলী তুলে ধরাও সম্ভব নয়।
মাওলা আলী (আ.) এর তিনটি পবিত্র উক্তি :
১. বুদ্ধিমত্তা সর্বোত্তম সম্পদ, মূর্খতা সবচাইতে বড় দুস্থতা, আত্মগর্ব সবচাইতে বড় বর্ববরতা ও নৈতিক চরিত্র সর্বোত্তম অবদান।
২. হীনতম জ্ঞান জিহ্বায় থাকে এবং উচ্চমানের জ্ঞান কর্মের মাঝে প্রকাশ পায়।
৩. আহলে বাইতকে যারা ভালোবাসে তাদেরকে অনেক দুঃখ-দুর্দশা-লাঞ্ছনা-উৎপীড়ন-যন্ত্রণা পোহাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
সম্পাদকীয়
জীবনের অতল ঘূর্ণাবর্তে নিকষ অন্ধকার যখন হাতছানি দেয় মোহময় নফসানিয়াতের নাগপাশে, নিভে যেতে চায় চেতনার প্রদীপ, তখনই অনন্ত দীপ্তির উৎস হয়ে, সূদীর্ঘ অধর্ম-জঞ্জালে সত্যসূর্য হয়ে উঁকি দেয় ইয়াওমে গাদীর। মহিমাময় ওয়ালাতের মাহফিলে প্রেম, প্রজ্ঞা ও ঐশীমহত্ত্বের মূতিমান প্রতিভূ মাওলা মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক ঘোষিত হয় আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার, রূহানিয়াতের পরম্পরা। বাবে ইলম, দামাদে মুস্তাফা, নূরে খোদা মাওলা আলী (আ.) নিযুক্ত হন উম্মতের রাহবার, রূহানিয়াতের মুর্শিদ ও জগতের কান্ডারী রূপে। মহান রবের তরফ হতে ঘোষিত হয় দ্বীনের পরিপূর্ণতা।
ইদে গাদীর কেবল ঐতিহাসিক সত্য নয়, গাদীর নূরূন আলা নূরের প্রবেশদ্বার, যেখানে সত্যান্বেষী লাভ করে তার ঈপ্সিত রূহানী জ্যোতির অনন্তধারা। চির প্রবাহিত বেলায়েত/ইমামত সালেককে নিয়ে যায় মাকামে মাহমুদায়, আলীমুন সেফাত তথা জ্ঞানগুণের পূর্ণ জাগরণেই উন্মোচিত হয় সেই অসীম শান্তিরাজ্যের দ্বার, ফাতিহাতুল কিতাব।
ইদে গাদীর ধর্মরাজ্যে সত্যনিশান উড্ডয়নের পাশাপাশি আমাদের অন্তররাজ্যেও জারি করূক মহিমাময় “মাওলাইয়াত”। রসুলে পাক (সা.) এর মুখনিসৃত “মাওলা” যথার্থই হয়ে উঠুক আমাদের অস্তিত্বের একমাত্র কান্ডারী, পথ প্রদর্শক।
ইদে গাদীর উদযাপন আমাদের অন্তরভূমিকে সিক্ত করুক মাওলাইতের নূরানী ঝর্ণাধারায়, ইরফানি মহত্ত্বে।
এই স্বরণিকার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভক্তি-সাজদা জ্ঞাপন করি মহান মাওলার রূহানী চরণ মুবারকে। আসুন, আমরা সকলেই মাওলার রূহানী দীপ্তির উত্তরাধিকারী হয়ে উঠি, মাওলার প্রজ্ঞা, প্রেম ও আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করি। অভিন্ন কন্ঠে ধ্বনি তুলি –
“ইয়াওমে গাদীর মুবারক”
লাবিব মাহফুজ চিশতী
সম্পাদক – ইদে গাদীরে খুম উদযাপন স্মরণিকা ২০২৫
সম্পাদক – আপন খবর পত্রিকা
পরিচালক – আপন ফাউন্ডেশন
শ্রদ্ধার্ঘ পত্র :
(মহান মুর্শিদ কেবলা হযরত খাজা হিমেল শাহ আল চিশতী নিজামী কর্তৃক, সম্মিলিত সুফি কল্যাণ পরিষদ (ঝিটকা শরীফ) আয়োজিত মাওলাইয়াত দিবস উদযাপন 2025 এ পঠিত)
আলহামুলিল্লাহ, আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লিম
বেলায়েতের সম্রাট হযরত আলী (আ.) কে মহান রবের পক্ষ হতে রসুলে খোদা (সা.) কর্তৃক মাওলাইয়াত প্রদান স্বরণে মহান মাওলার পবিত্র চরণে আমাদের –
ভক্তি প্রণত প্রার্থনা
“আনা মাদিনাতুল ইলমী ওয়া আলীউন বাবুহা”
আজ আমরা গাদীরের আলোয় আলোকিত অগনিত আত্মা একত্রিত হয়েছি সেই মহান দরোজায়, শুধু জ্ঞান নয়; যেখান থেকে নিয়ত উৎসারিত হয় প্রজ্ঞা, প্রেম ও রহমতের ঐশী ফোয়াড়া। এরাদায় বহন করে আলীমুন সেফাতের ঐশী প্রেরণা, আমরা একত্রিত হয়েছি আমাদের চিরকালের মাওলা, আমাদের অভিভাবক, রসুলে খোদা (সা.) এর একমাত্র উত্তরাধিকারী মাওলা আলী (আ.) এর রুহানী চরণ মুবারকে আমাদের ভক্তি ও সাজদা নিবেদন করার জন্য।
পবিত্র ১৮ জিলহজ্ব –
গাদীরে খুম নামক বিশাল বিস্তীর্ণ প্রান্তরে যেদিন থেমে গিয়েছিল রসুলে খোদা (সা.) এর বিশাল কাফেলা। মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে এসেছিল ঐশী নির্দেশ –
“ইয়া আইয়্যূউহার রসুলা বাল্লিগ মা উনজিলা ইলাইকা মির রাব্বিকা”
হে রসুল, তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা পৌঁছে দাও।
তপ্ত বালুকারাশির মধ্যে লক্ষ হৃদয়ের উপস্থিতিতে রসুলে খোদা (সা.) পৌঁছে দিলেন মহান রবের বার্তা –
মান কুনতুম মাওলাহু, ফাহাজা আলীউন মাওলা।
ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তৌহিদের নদীটি এসে মিশে গেল বেলায়েতের সাগরে। নত আসমান অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করল সে মহিমা। মাথা নিচু করে দাড়িয়েছিলেন জিবরাইল, আর মহান রব বলেছিলেন, আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম।
হে মহান মাওলা, আপনার মাওলাইয়াত প্রাপ্তিতে পূর্ণতা পেয়েছে দ্বীন ইসলাম। আপনার চরণ বিধৌত আবহায়াত সিঞ্চনে প্রাণ পেয়েছে ভ্রমান্ড, আপনার ঐশী প্রজ্ঞা ও প্রেমে মুক্তির পথ পেয়েছে অজস্র আত্মাসমূহ।
হে মহান মাওলা, আপনি সেই, যিনি জন্মগ্রহণ করেছেন কাবার ভেতরে। আপনি সেই, যিনি রসুলে খোদাকে প্রতিটি নিঃশ্বাসে ভালোবেসেছেন প্রাণাধিক। আপনি সেই, যিনি হিজরতের রাত্রিতে জীবনের মায়া পরিত্যাগ করে উন্মুক্ত তরবারীর মুখোমুখি হয়েছেন। আপনি জুলফিকার, উহুদ-খন্দক-খাইবারের বজ্রনিনাদ, আপনি সাইফুল্লাহ, আসাদুল্লাহ, আপনিই দ্বীন ইসলামের একমাত্র বিজয়। আপনি নূরে খোদা, আপনি তাওহীদের প্রথম প্রতিধ্বনী, আপনি রুহের দর্পণ, রসুলে খোদার হৃদয় হতে ফোটায় ফোটায় সঞ্চারিত হওয়া এলেমের দরিয়া আপনি। আমাদের অন্তরকে আপনার নূরের আলোয় আলোকিত, উচ্চকিত করুন হে মাওলা।
হে মহান মাওলা, আপনার মাওলাইয়াতে অভিষিক্ত হবার এ আনুষ্ঠানিকতায় আমাদেরকে কবুল করুন। আপনার অভিষেক তো আদিপিতা আদমের রুহপ্রাপ্তিরও পূর্বে হয়েছে। মানবীয় অজুদে আলীমুন সেফাত তথা জ্ঞানগুণের জাগরনেই ঘটে মাওলাইয়াত প্রাপ্তি। বিশ্বজনীন প্রজ্ঞা ও ইলমে মারেফাতের এ মহত্তম বিজয়েই কায়েম হয় ঈদে গাদীর। ঈদে গাদীর কেবল একটি দিনের নাম নয়, গাদীর রুহানিয়াতের এমন এক মাকাম, রুহ যেখানে তার মাওলাকে চিনে নেয়।
হে মহান মাওলা, নফসানিয়াতের প্রবল পরাক্রমে আজ ম্রিয়মাণ আমাদের রুহের ইনছানিয়াত। উম্মতের ঘোর অন্ধকারে আপনিই একমাত্র আলো, কালের ভাঙনে আপনিই একমাত্র আশ্রয়। আমাদের অস্ত্বিত্বকে আপনার জুলফিকারের অমৃত পরশে পূতঃপবিত্র করার সৌভাগ্য নসীব করুন।
হে মহান মাওলা, আপনার পবিত্র চরণ মুবারকে আমাদের ভক্তি নিবেদন, আপনার অসীম নূরের চ্ছটায় আমরা জ্বালিয়ে দিতে চাই আমাদের অন্তরের সকল পর্দা, প্রতিটি আত্মা যেন খুঁজে পায় তার মাওলাকে।
আমাদের ভক্তিপ্রণত প্রার্থনা কবুল করুন, মঞ্জুর করুন।
ইয়া আলী মাদাদ, ইয়া মাওলা আলী মাদাদ, ঈদে গাদীর মুবারক।
লাবিব মাহফুজ চিশতী
সম্পাদক – ইদে গাদীরে খুম উদযাপন স্মরণিকা ২০২৫
সম্পাদক – আপন খবর পত্রিকা
পরিচালক – আপন ফাউন্ডেশন