অনুবাদ – ভালোবাসার চল্লিশ নিয়ম 17&18

পর্ব ১৭ এবং পর্ব ১৮ একত্রে
ভাবানুবাদ – লাবিব মাহফুজ

পর্ব – ১৭
মানব অস্তিত্ব একটি পূর্ণতম অস্তিত্ব, যে অস্তিত্বের মধ্যে জগতের সকল উপাদান বিদ্যমান। সমগ্র মহাবিশ্ব একটি মানব অস্তিত্বের মধ্যে নিহিত। আমরা যা পছন্দ করি অথবা আমরা যা ঘৃণা করি, তার সবই ক্রিয়াশীল আমাদের মানবীয় অস্তিত্বের মধ্যে। স্রষ্টা তাঁর রহস্য কে প্রকাশ করেছেন মানবীয় অস্তিত্বের মধ্যে। তাই যা কিছু খোঁজার বা পাওয়ার তার সবই রয়েছে মানবীয় অজুদে তথা মানুষের সিমানায়। মানুষ মোহনায় বিরাজিত জগতের অপার রহস্য ভান্ডারের সকল চাবিকাঠি।

মানব মোহনায় বিরাজিত অনন্ত রহস্যকে তথা পরম প্রভুকে আমাদের উপলব্ধিতে প্রস্ফুটিত হতে বাধা প্রদান করে শয়তান শক্তি যা আমাদের অস্তিত্বের মধ্যেই অবস্থান করে। নিজের বাহিরে শয়তানকে কখনো খুঁজে পাওয়া যাবে না। শয়তান বা খান্নাছ শক্তি আমাদের ভেতরে থেকে আমাদেরকে খারাপ কাজে প্রেরণা দেয়। এটি আমাদের মধ্যে থেকে আমাদের আক্রমণ করে। এটি আমাদের ভেতরের একটি কন্ঠস্বর যা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে খারাপসমূহের উজ্জীবনে প্রয়াস চালাচ্ছে।

যদি আপনি জানতে চান জগতের অপার রহস্য, অনুধাবন করতে চান অনন্ত প্রেমের লীলা, সম্পূর্ণ রূপে প্রস্ফুটিত করতে চান নিজেকে, তাহলে সততা ও কঠোরতার সাথে আপন অস্তিত্বে বিরাজিত শয়তান বা খান্নাছ শক্তির মোকাবিলা করুন।

অস্তিত্বে অবস্থিত খারাপসমূহের ত্যাগেই উদ্ভাসিত হবে অনন্ত সত্য।

পর্ব – ১৮
প্রকৃত বিশ্বাস হলো আমাদের ভিতরের বিশ্বাস। বাহিরের সংস্কার তো কেবল বাহিরেই থাকে। হৃদয়ের সংশয়বিহীন সুদৃঢ় ধারনা সমুহের সমন্বয়েই আমরা আমাদের বিশ্বাসের ভীতকে নির্মাণ করে থাকি। প্রভু প্রেমের পথে সবচাইতে মূল্যবান হলো আমাদের ভিতরের পরিশুদ্ধ বিশ্বাস।

আমাদের বাহিরকে আমরা বাহিরের উপাদান দিয়ে ধৌত করতে পারি। কিন্তু অভ্যন্তরকে ধৌত করতে হয় অভ্যন্তরীন উপাদান দিয়ে। আমাদের হৃদয়ে লেগে থাকা ঘৃণা, গোঁড়ামী আর অন্ধবিশ্বাস তথা কুসংস্কারের দাগ, যা বাহিরের পানি দিয়ে ধৌত করা যায় না। যে নোংরাগুলো আমাদের হৃদয়কে প্রতিনিয়ত দূষিত করে, তা ধৌত করার জন্য প্রয়োজন এক বিশেষ উপাদান।

উপবাস বা সংযম সাধনার মধ্য দিয়ে শরীরকে শুদ্ধ করা যেতে পারে। কিন্তু যখনই আপনি আপনার হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করতে চাইবেন, তা করতে হবে কেবল ভালোবাসা দিয়ে। ভালোবাসাই সেই নিরন্তর মহিমা, যা আপনাকে ভিতরে বাহিরে পরিশুদ্ধ করবে।

একমাত্র ভালোবাসাই হৃদয়কে শুদ্ধ করতে পারে।

আপন খবর