পর্ব ২৩ এবং পর্ব ২৪ একত্রে
ভাবানুবাদ – লাবিব মাহফুজ
পর্ব ২৩
প্রভুর সকল সৃষ্টিসমূহের মাঝে মানুষ এক অনন্য সৃষ্টি। মানুষ মোহনাতে মূর্ত হয়েছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা। প্রভুর নিজের রুহ থেকে তিনি রুহ ফুঁকে দিয়েছেন মানুষকে। মানবকাবাতে আসন গড়েছেন তিনি। মানবতত্ত্বে প্রভুতত্ত্বের প্রকাশ প্রত্যাশায়।
মানুষকে এমন মহত্ত্বে নির্মিত করা হয়েছে, যাতে মানুষ হয়ে উঠতে পারে যথার্থই প্রভুর প্রতিনিধি। প্রভুগুণে গুণান্বিত হয়ে মানুষ যাতে মানবসত্ত্বায় প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, সে শক্তি সামর্থ্য প্রদান করা হয়েছে মানুষকে।
এবার প্রশ্ন করুন নিজেকে, যে মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্ত জন্মৃ আপনার, কতটুকু পূরণ করছেন তার? আপনার আচরণ কি প্রভু আচরণ দ্বারা পূনর্নবায়িত? সর্বজ্ঞানস্বামী কি প্রতিস্থাপিত হয়েছে আপনার অস্তিত্বে? যদি না হয়, তাহলে আপনি চরমভাবে ব্যার্থ।
মনে রাখবেন, মানুষ হিসেবে আমাদের একমাত্র কর্তব্য হচ্ছে আমাদের অস্তিত্বে প্রবাহিত শাশ্বত সত্ত্বাটিকে আবিষ্কার করা এবং তাতে লিপ্ত হয়ে নিজেকে প্রভুত্বে উন্নীত করা, যে অবস্থাকে আমরা প্রভুর প্রতিনিধি বলে থাকি।
প্রভুসত্ত্বাকে অস্তিত্বে জাগ্রত রাখাই আমাদের সাধনা।
পর্ব ২৪
অজ্ঞানতার মোহপাশে আবদ্ধ মন আমাদের। বহুদূরে কোনো সূদুর কল্পনায় খুঁজে বেড়াই স্বর্গ আর নরক। না, দূরে নয়! বরং এখানেই তো রয়েছে জান্নাত জাহান্নাম! বন্ধ করুন সূদুর অন্বেষণ। ফিরে তাকান আপনার পানে! চোখ মেলে দেখুন – এইতো শাশ্বত স্বর্গ! শাশ্বত নরক!
অন্ধ অনুমান কল্পনায় স্বর্গ নরক কে অঙ্কিত না করে দৃষ্টি নিবন্ধ করুন এই মুহুর্তে। দেখুন, কি অনিন্দ্য সুন্দর স্বর্গ! চারধারে পারিজাত মন্দারের সারি! ধীর প্রবাহিনী অলোকনন্দা! শান্তি-সুবাসে উদ্বেলিত হবেন আপনি! অথবা দেখে নিন নরক! পূর্ণত্বের তৃষ্ণা নিয়ে কি ব্যাকুল ছুটে চলা পথ থেকে পথান্তরে! অনন্ত যন্ত্রণার পথে পথে! দুঃখের মৃণালে নিত্য সুখের ফুল ফুটাইতে কি অধীর অপেক্ষায় আধার নিশি যাপন করছে নরকবাসী!
যাপিত জীবনকে রাঙিয়ে তুলুন প্রেমের রঙে। জিবন স্বর্গে পরিণত হবে। অথবা জিবন কে বহন করে চলুন গাধার বোঝার মতো, প্রেমহীন – নিশ্চিতই আপনি অবস্থান করবেন নরকে।
প্রেমের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি আপনার জিবনকে পরিণত করবে স্বর্গে অথবা নরকে।
প্রেম! এমনই এক মহাশক্তি!