প্রবন্ধ – আমার কৈফিয়ত ও প্রত্যাশা

লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী

বর্তমান রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার ব্যাপারে আমার অবস্থান নিয়ে অনেকেই নানান প্রশ্ন করেছেন। অল্প কথায় সেসবের উত্তর দিচ্ছি।

১.
আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি একজন সুফিবাদী। সুফিবাদ আমার রক্তে, আমার শিরা উপশিরায়। আমার আদর্শ বা চেতনা জুড়ে রয়েছে একমাত্র সুফিবাদ। আমি মাজারভক্ত, ওলী-মুর্শিদের অনুগত এবং ধর্মবিশ্বাসে পাক-পাঞ্জাতন তথা দ্বীন-ইসলামের আধ্যাত্ম চেতনার অন্ধ অনুসারী। আমি বিশ্বাস করি অসাম্প্রদায়িকতা, জ্ঞানজাগতিক উত্তরোত্তর উন্নতি ও মানবীয় অস্তিত্বের ক্রমবর্ধমান অগ্রসরতায়। রাজনীতি বা জাগতিক কোনো থিওরী আমাকে কখনোই টানে নাই। নিজেকে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করতে ছোটবেলা থেকেই সজাগ ছিলাম। বরং ক্ষমতা বা অর্থ-বিত্তের প্রাচূর্যকে আধ্যাত্ম-সাধনার পথে অন্তরায় হিসেবে জানি। রাষ্ট্রীয় পালাবদল, কোনো শক্তির উত্থান-পতন, আইন বা ক্ষমতা – এসব আমাকে তেমন বিচলিত বা উৎকণ্ঠিত করে না। আপন সত্ত্বাই যেখানে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত নয়, সেখানে রাষ্ট্র/সমাজ বা দেশ নিয়ে কথা বলা বা ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়াকে অযোগ্যতা মনে করি। বরং প্রচুর যোগ্য ব্যক্তি রয়েছেন যারা যথাযথভাবে দেশ পরিচালনা করবেন। আমি বরং একজন সাধারণ নাগরিক হয়ে জিবন যাপন করতে চাই।

২.
দেশ যারাই পরিচালনা করবেন তাদের প্রতি আমার এক্সপেক্টেশন হলো আমরা ধর্মীয় পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। আমরা যার যার ধর্মবিশ্বাস কে লালন করতে চাই। জ্ঞানজাগতিক চর্চা ও ধর্মবোধ অনুযায়ী চলার মতন পরিবেশ চাই। ওলীদের মাজার বা রঁওযা আমাদের পরম ভক্তি নিবেদনের স্থান। সেসবের যথাযথ সম্মান ও ভাবগাম্ভীর্যতা বজায় রাখুন। সুফিরা দেশের সবচেয়ে উন্নত মানুষ। তাদের যথাযথ সম্মান দিন। ভূলে গেলে চলবে না, এদেশ ওলীদের দেশ, এদেশের ধর্ম সুফিদের ধর্ম। তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শনে যেন কমতি না হয়।

অনতিবিলম্বে মাজার বা রঁওযাসমূহকে নিরাপত্তা দিন। সুফিদের উপযুক্ত পরিবেশ দিন যেন তাঁরা তাদের স্ব-সাধনায় লিপ্ত থাকতে পারে। মাজারে আক্রমণকারী দূর্বৃত্তদের প্রতিহত করুন, বিচারের আওতায় আনুন। দেশ শান্তিময় হোক, সবার কল্যাণ হোক।

লাবিব মাহফুজ চিশতী
সম্পাদক : আপন খবর পত্রিকা
চেয়ারম্যান : আপন ফাউন্ডেশন।

আপন খবর