লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী
ভাই, যাই করেন না কেনো, নামাজটা পড়েন!
ইদানিং বেশ কয়েকটি ঘটনায় ফুটে উঠেছে, চরমমাত্রার খারাপ মানুষেরা চরমভাবে “ধার্মিক”! আমাদের দেশে এটা এখন খুবই নিয়মিত ব্যাপার। অপরাধীরা মসজিদ নির্মাণ করছে, দান করছে, নিয়মিত নামাজ পড়ছে, নামাজের শো অফ করছে। রাস্তাঘাটে, বাসে-ট্রেনে, সমুদ্র সৈকতে, খালে বিলে কোথাও তারা নামাজ ক্বাজা করছে না। এই টেন্ডেন্সির উৎস খুঁজে দেখা যাক।
১৯ শতকের শেষদিকে শুরু হওয়া সালাফি মুভমেন্ট বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে বেশ জোরেশোরেই। মূলত সৌদি ধর্মদ্বেষী পেট্রোডলারের রাজনীতির বদৌলতে ওয়াহাবিজম এবং ওয়াহাবিজমের সহোদর সালাফিজম বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করে। সুতীব্র প্রচার প্রচারণার ফলে বাংলাদেশে আথারিজম বা সালাফিজম একশ্রেণীর মানুষের ভেতর জায়গা করে নেয়। তাদের অতি ‘পিউরিটান’ প্রবণতা ও ধর্মশাস্ত্রের অপব্যাখ্যা অক্ষরভিত্তিক/অর্থোডক্সি হওয়ায়, তারা দেশীয় গোঁড়া মুসলমানদের দলে টানতে সক্ষম হয়। ধর্ম শাস্ত্রের গূঢ় রহস্যবোধের বিপরীতে তারা অক্ষরভিত্তিক এক নব্য ব্যাঙের ছাতা টাইপ ধর্ম-কানুন শুরু করে যা বোধহীন গোঁয়ার-মূর্খদের জন্য কমফোর্টেবল। এলেগরিক্যাল মিনিংলেস এক অদ্ভূত মেটাফোরিক ধর্মতত্ত্ব কে উপজীব্য করে তারা অন্তঃসারশূন্য এক কিম্ভুতকিমাকার ধর্মপ্রচার করে। তাদের প্রচারিত ধর্মের সারকথাই ছিল –
“ভাই, যাই করেন না কেনো, নামাজ পড়েন”! যাই করেন না কেনো, মসজিদ মাদ্রাসা বানান, মাফ পেয়ে যাবেন!প্রতি নামাজে আপনি সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো পবিত্র!
ধর্মশাস্ত্রের চরম অপব্যখা, যা নিয়ত প্রচার করে যাচ্ছে ধর্মান্ধ ওহাবী, সালাফি, লা মাযহাবী, জামাতি, তাবলিগি সহ সকল মূর্খ সম্প্রদায়, তাদের এসব অনৈসলামিক অপপ্রচারেই মূলত অপরাধীরা পেয়েছে অপরাধ করার ও অপরাধ থেকে মাফ পাওয়ার সূবর্ণ সুযোগ। তারাও ভালো করেই কাজে লাগাচ্ছে সুযোগটি।
যাই হোক, যেটা বলতে চাচ্ছি, ধর্মনাশের চক্রান্তে নব্য এজিদি মতবাদগুলো অনেকটাই সফল! ধর্মকে তারা আচরণিক বানিয়ে ছেড়েছে! নামাজকে বানিয়েছে শারিরিক কসরৎ মাত্র, খোলসসর্বস্ব! যে নামাজ সকল অন্যায় থেকে ফেরায়, সে নামাজ গুটিকয় সত্যানুসন্ধানীদের সাথে হয়েছে নির্বাসিত!
এজিদ মুয়াবিয়া গংরা প্রতিযুগে নব নব রূপে/সাজে হাজির হয় আমাদের সম্মুখে, আমাদের ঈমান নাশের জন্য। তাদের কাজ একটাই, ধর্মকে অন্তঃসারশূন্য আচরণে পরিণত করা। যে কাজটি অত্যন্ত সুচারুরূপে সম্পাদন করেছে সালাফিরা, পিউরিটান অর্থোডক্সিরা। তাদের খামারেরই হাইব্রিড উৎপাদন এসব আবেদ আলীরা।
লেখক – লাবিব মাহফুজ চিশতী
সম্পাদক – আপন খবর পত্রিকা
০৯|০৭|২০২৪ ইং